ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সিন্ডিকেটের কারণে ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না কৃষক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১২ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৯
সিন্ডিকেটের কারণে ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না কৃষক

ঢাকা: বড় বড় রাইস মিলারদের সিন্ডিকেটের কারণে কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না বলে মনে করে বাংলাদেশ রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। ধানের ন্যায্যমূল্য পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আট দফা দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

কৃষকদের নিয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ব্যাপকভাবে অটো রাইস মিল সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা ধান চাষে উৎসাহী হয়ে এর চাষ বাড়িয়ে দেন।

কারণ তাদের উৎপাদিত ধান তখন মিল মালিকরা ন্যায্যমূল্যে কিনে নিতেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১০-১২ বছর ধানের মূল্য স্থিতিশীল ছিল।  

তবে, দেশের সিডিউল ব্যাংকগুলো কিছুসংখ্যক অটো রাইস মিল মালিককে ২০ কোটি থেকে ২০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত চলতি মূলধন দেয়। অন্যদিকে শতকরা ৯০ ভাগ অটো রাইস মিল মালিককে দেয় ৫০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত। এতে আর্থিকভাবে বড় বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি কিছু বড় গ্রুপ অটো রাইস মিল ব্যবসায় আসায় ৫০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত মূলধন পাওয়া মিলগুলোর মধ্যে ৬০-৭০ শতাংশই বন্ধ হয়ে যায়। একদিকে মূলধন না থাকা, অন্যদিকে বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে ওইসব মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে এ কে এম খোরশেদ আলম বলেন, আমরা দেখেছি সম্প্রতি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে এবং একজন শ্রমিকের মজুরি এক হাজার টাকা হওয়ায় কৃষক পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি বলেন, আমরা ৬৮ হাজার গ্রামের কৃষক ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অটো রাইস মিল মালিকরা একে অপরের সম্পূরক। ধান চাষ না হলে অটো রাইস মিল যেভাবে টিকে থাকবে না, তেমনি অটো রাইস মিল বন্ধ হয়ে গেলে কৃষকরা ধান বিক্রি করার ক্ষেত্র খুঁজে পাবে না।

সেজন্য ধানের ন্যায্য মূল্য পেতে সরকারের কাছে আট দফা দাবি তুলে ধরেন খোরশেদ আলম। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শক্তিশালী টিমের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষক শনাক্ত করা, শতকরা ২ শতাংশ হারে কৃষি ঋণ বিতরণ করা, কৃষি যান্ত্রিক উপকরণ কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে ৫ থেকে ৭ বছর মেয়াদী বিনা সুদে ব্যাংকের মাধ্যমে সরবরাহ করা, সেচের বিদ্যুৎ বিল ইউনিটপ্রতি ৩-৪ টাকা নির্ধারণ করা, বন্ধ অটো রাইস মিলগুলো ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করে রিসিডিউলের মাধ্যমে ২৫ থেকে ১০০ কোটি টাকা চলতি মূলধন দেওয়া, সুদের হার কৃষি শিল্প হিসেবে ৪-৫ শতাংশ হারে নির্ধারণ করা, বিদ্যুৎ বিল কৃষি শিল্প হিসেবে ৪ থেকে ৫ টাকা ইউনিট নির্ধারণ করা এবং বিদেশ থেকে আপাতত চাল আমদানির ওপর শুল্ক হার ২৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নত করা।

রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মনে করেন, উপরোক্ত দাবিগুলো শতভাগ পূরণ হলে চালের বাজারে ধানের মূল্য স্থিতিশীল থাকবে। কৃষক তার উৎপাদিত ধান বিক্রির ক্ষেত্র খুঁজে পাবে এবং ন্যায্যমূল্য হতে বঞ্চিত হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৯
এসএমএকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।