কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের দু’টি গ্রামে ১০ বিঘা জমিতে আখের চাষ করা হয়েছে। ধানখোলা ইউনিয়নের জুগিন্দা গ্রামের নজরুল ইসলাম ২ বিঘা ও একই ইউনিয়নের গাঁড়াডোব পোড়াপাড়া এলাকার আজাদ আলী ৮ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের আখের চাষ করেছেন।
ওই দুই কৃষকে আশা চলতি মৌসুমে বিঘা প্রতি এক থেকে দেড়ে লাখ টাকা খরচ করে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় করবেন।
জুগিন্দা গ্রামের আখ চাষি নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে আখ ৫-৬ হাত লম্বা হয়েছে। বিক্রি পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ হাত পর্যন্ত লম্বা হবে বলে আশা। ছোট পাপ, মিশ্রি দানা ও ২০৮ জাতের আখের চাষ করেছেন। এ জমিতে ২০৮ জাতের আখের ফলন খুব ভালো হয়। প্রতিটি ঝাঁড়ে ১২ থেকে ১৪টি করে আখ রাখা হয়েছে।
আখ চাষের পাশাপাশি মৌসুমের শাক-সবজিরও চাষ করেছেন। ওই দুই কৃষকের সফলতা দেখে এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক আগামী বছরে আখ চাষ করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা যায়।
শ্রমিক রমজান আলী, হুরমত আলী ও রওশন আলী জানান, আশ্বিন মাসে আখের বীজ বপন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা এর পরিচর্যা করে যাচ্ছেন। আখ ক্ষেতে শারীরিক পরিশ্রম তেমন নেই বলেও জানান তারা।
জুগিন্দা গ্রামের আখ চাষি নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য ফসলে লোকসান হলেও আখ চাষে লোকসান হবে না, এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। আমিই এলাকায় প্রথম আখের চাষ শুরু করেছি। দুই বিঘা জমিতে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
বর্তমানে দুই বিঘা জমিতে প্রায় ৩২ হাজার আখ রয়েছে। প্রতিটি আখের মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যাবে। দুই বিঘা জমিতে প্রায় ১২ লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন তিনি।
আখ চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও মেহেরপুরের আখ চাষিদের জন্য নেই কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, নেই কোনো প্রকল্প। তাই কৃষি অধিদফতরের সাহায্য ও সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আরও ব্যাপকভাবে আখ চাষ করতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মেহেরপুরের মাটির গুণগত মান ভালো। যেকোনো ফসলের বীজ রোপণ করলেই ফলনও ভালো হয়। বর্তমানে ধান ও অন্যান্য শাক-সবজির তুলনায় আখ চাষ করে মানুষ ভালো ফলন ও দাম পাচ্ছেন। তাই আখ চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।
তিনি বলেন, জেলায় আখ চাষ এখনও ব্যাপকভাবে হচ্ছে না। তবে আখ চাষে উৎসাহী করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের সাহায্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কোনো সাহায্য সহায়তা এসে পৌঁছালে কৃষকদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৪ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
জিপি