ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

উঠছে সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা, কর্মচঞ্চল জেলেপাড়া 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
উঠছে সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা, কর্মচঞ্চল জেলেপাড়া  বঙ্গোপসাগর

কক্সবাজার: বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরা দু’মাস পাঁচদিন বন্ধ থাকায় পর নিষেধাজ্ঞা উঠছে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাত থেকে। বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে ফের সাগরে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কক্সবাজারের কয়েক লাখ জেলে।

দীর্ঘদিন কর্মহীন অবস্থায় থাকার পর এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় জেলেপাড়ায় আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তবে দীর্ঘদিন বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় এবার বেশি মাছ পাবেন বলে আশাবাদী জেলেরা।

সাগরে মাছসহ মূল্যবান প্রাণিজ সম্পদের ভাণ্ডারের সুরক্ষায় চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞারোপ করে সরকার।

ইলিশের জাটকা নিধনে নিষেধাজ্ঞারোপের সফলতাকে অনুসরণ করে বঙ্গোপসাগরে মাছসহ মূল্যবান প্রাণিজ সম্পদের ভাণ্ডারের সুরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সামুদ্রিক মাছসহ চিংড়ি-কাঁকড়ার মতো ক্রাস্টেশান আহরণেও ছিল এ নিষেধাজ্ঞার আওতায়।

জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে দু’মাস ধরে তারা আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করেছেন।

কুতুবদিয়াপাড়ার নবী হোসেন বলেন, প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে মাছ ধরা বন্ধের নিষেধাজ্ঞার কারণে খুব বেকায়দায় পড়তে হয়েছে।

তিনি বলেন, অনেকদিন পর সেই খরা কাটিয়ে আবার মাছ ধরতে সাগরে যাবো। খুব ভালো লাগছে।

নাজিরারটেক এলাকা থেকে মাছ সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করেন সুলতান আহম্মদ।

সুলতান বলেন, প্রতিদিন জলে গিয়ে খালি ঝুঁড়ি নিয়ে ফিরে আসি। ব্যবসা বন্ধ থাকায় আমাদের চলতে ফিরতে খুব সমস্যা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক মোস্তাক আহমদ বলেন, ৬৫ দিনে অনেক জেলে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। কিন্তু সেই দুঃখের দিন শেষ হচ্ছে আজ রাত থেকে। এইদিন থেকে বুধবার আবার সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন জেলার প্রায় ৫০ হাজার নিবন্ধিত জেলেসহ কয়েকলাখ জেলে। দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞার পর জেলেপাড়ায় আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম খালেকুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, আগে সমুদ্রে বিভিন্ন প্রজাতির বড়বড় মাছ পাওয়া যেতো। কিন্তু এখন সচরাচর সে ধরনের মাছ পাওয়া যায় না। এর কারণ মাছের প্রজননকালীনও সাগরে মাছ ধরা অব্যাহত থাকে।

তিনি বলেন, প্রজননকালীন দীর্ঘ ৬৫দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বর্তমানে সাগরে মৎস্য ভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে। বড় আকারসহ প্রচুর মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, জেলায় ৪৮ হাজার ৩৯৩ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এছাড়াও অনিবন্ধিত জেলে রয়েছে আরও অনেক। এর সুফল পাবেন জেলেরাই।

জানা গেছে, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত গবেষণা মতে, মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননকাল। এ কারণেই সাগরের মাছসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রাণিজসম্পদ রক্ষার পাশাপাশি ভাণ্ডার বাড়াতে দীর্ঘসময় মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞারোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। এর পরিপ্রক্ষিতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।