ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

‘কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না এটা দিবালোকের মতো সত্য’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
‘কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না এটা দিবালোকের মতো সত্য’ কর্মশালায় উপস্থিত কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের কৃষক উৎপাদিত পণ্যে সঠিক দাম বা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। এটা দিবালোকের মতো সত্য বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে ‘আধুনিক কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন সচিব।

তিনি বলেন, কৃষকের উৎপাদিত পণ্যে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।

তা না হলে কৃষি থাকবে না। কৃষকের কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হয়। অথচ তারা বেশি দাম দিয়ে কৃষি সামগ্রী কেনেন। অনেক সময় দেখা যায়, কৃষকদের পণ্য কম দামে ধনীরা কিনে গুদামজাত করে ফেলেন। এতে কৃষক লাভবান না হয়ে অন্য কেউ হচ্ছেন। যখন কৃষকের ঘরে ধান উঠে, তখন ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করে তারা। অথচ আকালের সময় কৃষক ৩০ টাকার পরিবর্তে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় চাল কেনেন। তাই কৃষক যেন পণ্যের সঠিক দাম পায়, সে বিষয় নিশ্চিত করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। কৃষকের দুর্ভোগ যেন না থাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে।

তেল উৎপাদন প্রসঙ্গে সচিব বলেন, বছরে ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। জমি সংকটের কারণে আমরা ভোজ্যতেল উৎপাদন করতে পারছি না। এছাড়া ভোজ্যতেল উৎপাদন করতে গেলে গম ও আলু উৎপাদন কমে যাবে।

কৃষি জমি হারিয়ে যাচ্ছে দাবি করে নাসিরুজ্জামান বলেন, বিশ্বের সব স্থানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই জমি হারিয়ে যাচ্ছে। দেশে নদীভাঙন বেড়েছে। এক সময় এক কিলোমিটার ক্যাচমেন্ট নিয়ে যমুনা প্রবাহিত হয়েছে। সেই নদী এখন ১৪ কিলোমিটার ক্যাচমেন্ট নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে কৃষকের জমি বিলীন হচ্ছে। নদী খনন করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

কৃষি সচিব বলেন, ব্যবসায়ীদের মতো কৃষি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের এআইপি (এগ্রিকালচারাল ইম্পরট্যান্ট পারসন) দেওয়া হবে। কৃষি কাজ ও উৎপাদনে আগ্রহ বাড়াতে এই প্রণোদনা দেওয়া হবে। সিআইপির (কমার্শিয়াল ইম্পরট্যান্ট পারসন) মতো এআইপিরাও ভিআইপি জোনে সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এ ব্যাপারে নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, কৃষির সুবিধার জন্য কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা হচ্ছে। এটি পাস হলে কৃষক বিনা সুদে ঋণ পাবে। কৃষক কেবল ঋণের আসল ব্যাংকে পরিশোধ করবে। সুদ দেবে সরকার।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তৃতা করেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ইউসুফ, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, অধিদপ্তরের পরিচালক চণ্ডীদাস কুণ্ডু ও কৃষিবিদ জাকির হাসান।

কৃষি সচিব এও বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অংশ হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হবে। ২০১৫ সালে প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ছিল ২.৬৬ মেট্রিক টন। আমরা এ লক্ষ্য অর্জনে তিন ফসলি জমি চার ফসলি করার পরিকল্পনা নিয়েছি।

‘আমরা চাই লাভজনক ও নিরাপদ কৃষি। এ নিয়ে কাজ চলছে। ঢাকার মার্কেট টার্গেট করে রাজধানীর আশপাশে নিরাপদ ফসলের বাজার গড়ে তোলা হবে। ’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় কৃষি নীতিমালায় প্রাইস কমিশন (কৃষি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ) রাখা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
এমআইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।