সূত্রমতে, কৃষকদের দিক বিবেচনা করে সরকার এবার প্রথম আমন ধান সংগ্রহ করছে সরকার। সে সিদ্ধান্তনুযায়ী বরিশাল অঞ্চলের তালিকাভুক্ত মাঠপর্যায়ের কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান সংগ্রহ শুরু করা হয়।
বরিশাল জেলায় ৭ হাজার ৯২০ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১০ উপজেলায় ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে শুরু থেকেই আমন ধান খাদ্যগুদামে দেওয়া নিয়ে চাষিদের মধ্যে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায়নি। আবার এমনও হয়েছে আমন ধানের পরিবর্তে অনেক কৃষকই বোরো ধান খাদ্যগুদামে সরবরাহের চেষ্টা করেন।
এর কারণ হিসেবে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বরিশালে মূলত আমন থেকে বোরোর আবাদ বেশি হয়ে থাকে। আবার আমন ধান যেটুকু চাষ করা হয়, তার বেশিরভাগই কৃষক নিজেদের খাওয়ার জন্য রেখে দেন। ফলে আমন বিক্রি এ অঞ্চলে তেমন একটা হয় না। এছাড়া, এ বছর আমন ধানে চিটা দেখা দেওয়ায় উৎপাদনও কিছুটা কম হয়েছে বরিশাল অঞ্চলে।
অপরদিকে সরকারিভাবে ধান কেনার প্রথম দফার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই খোলা বাজারে ধানের দাম কিছুটা বেড়ে যায়, ফলে অনেক চাষি সেখানেও তাদের উৎপাদিত ধান বিক্রি করে দিয়েছেন।
এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী উপজেলা ওসিএলএসডি সুভাষ চন্দ্র পাল জানান, আমন ধান সংগ্রহের শুরু থেকেই তালিকাভুক্ত কৃষকদের বিধি মোতাবেক গুদামে ধান নিয়ে আসতে বলা হয়। কিন্তু প্রথমবার বরিশালে আমন ধান সংগ্রহ হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। অনেক কৃষক আমনের পরিবর্তে বোরো নিয়ে এসেছেন খাদ্যগুদামে, যা রাখা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও যারা পর্যাপ্ত আর্দ্রতাসহ সরকারি নিয়মের বাইরে ধান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের বিধি মেনে নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গৌরনদী উপজেলার ৮৭৪ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক উপজেলায় আবাদ কম হয়েছে। ফলে সেখান থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান কেনা সম্ভব হয়নি। আবার অনেক উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধানও পাওয়া গেছে। এগুলো এখন ঠিক করে নেওয়া হচ্ছে।
তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ রিয়াজুর রহমান রাজু জানিয়েছেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যেটুকু সংকট রয়েছে তা আজ-কালের মধ্যেই পূরণ হয়ে যাবে। প্রথমবার আমন ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে বিধায় প্রথমদিকে কৃষকদের বুঝতে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে।
বরিশাল জেলায় মোট ৭ হাজার ৯২০ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলার ১০ উপজেলা থেকে ৭ হাজার ৫৫০ দশমিক ৩৬০ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হয়, যেখানে এখনো ৩৬৯ মেট্রিকটনের বেশি ধানের সংকট রয়েছে। এর মধ্যে বাকেরগঞ্জ উপজেলাতেই দুশ’ মেট্রিক টনের বেশি ধান এখনো সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২০
এমএস/এফএম