ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মাছ উৎপাদন বেড়ে ৪৩ লাখ মেট্রিক টন

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২০
মাছ উৎপাদন বেড়ে ৪৩ লাখ মেট্রিক টন জেলেরা মাছ শিকার করছেন।

ঢাকা: এক বছরের ব্যবধানে দেশে মাছ, গরু ও ছাগলের উৎপাদন আরও বেড়েছে। দেশে বর্তমানে উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ৪২.৭৭ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ মাছ মোট ৩৬.২২ লাখ মেট্রিক টন ও সামুদ্রিক মাছ ৬.৫৫ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ পরিমাণ ছিল ৪১.৩৪ লাখ মেট্রিক টন। 

দেশে মাছ উৎপাদনের পরিমাণ আরও বাড়াতে কয়েকটি ভ্যাসেল কেনার পরিকল্পনা করছে মৎস্য অধিদপ্তর। এর মাধ্যমে গভীর সমুদ্র থেকে বেশি পরিমাণে টুনা মাছ আহরণ করা হবে।

এ ব্যাপারে নতুন প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।

এ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ)  রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, সামনে দেশে মাছের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা হবে। এ জন্য আমরা বেশকিছু প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ মাছ উৎপাদনের পরিমাণ বেশি।   সামুদ্রিক মাছ বলতে উপকূলীয় এলাকা থেকে উৎপাদিত মাছ।  আমরা এখন গভীর সমুদ্রে থেকে সরকারিভাবে টুনা মাছ আহ্রণের ব্যাপারে ভাবছি। এতে করে দেশে মোট মাছ উৎপাদনের পরিমাণ আরও বাড়বে। এ জন্য কয়েকটি ভ্যাসেলও কেনা হবে।                        

 মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ দেশে মাছে-ভাতে বাঙালি প্রবাদটি এসেছিল মৎস্য সম্পদের প্রাচুর্য থাকার কারণে। বর্তমান বিশ্বে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জাটকা সংরক্ষণসহ সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে দেশে বর্তমানে ইলিশ মাছের পরিমাণ বেড়েছে।  

সূত্র জানায়, দেশে মোট উৎপাদিত মাছের মধ্যে চাষকৃত মাছের পরিমাণ ২৪ লাখ মেট্রিক টন।  এর মধ্যে পুকুরে সব থেকে বেশি ১৯ লাখ মেট্রিক টন মাছ চাষ হয়। এরপরই রয়েছে প্লাবনভূমি থেকে উৎপাদিত মাছ রয়েছে সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন।   এছাড়া নদীর মোহনায় ৩.২১, সুন্দরবনে ০.১৮, বিলে ১, কাপ্তাই লেকে ০.১০,  মৌসুমি মাছ চাষ ২.১৬ ও চিংড়ি ঘেরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করা হয়েছে। এর বাইরে উপকূলীয় এলাকায় ৫.২৯ মেট্রিক টন মাছ চাষ হয়েছে। এছাড়া বাওড়, হাওর, খাঁচা ও পেন কালচারে মাছ চাষ বাড়ছে।

এদিকে দেশে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু ও হাস-মুরগির উৎপাদন বেড়েছে বলে জানিয়েছে  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। গবাদি পশু থেকে মাংস ও দুধের চাহিদা পূরণ হয়।

প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে মোট গবাদিপশুর সংখ্যা  (গরু ও ছাগল) ২ কোটি ৯২ লাখ ৬ হাজার।  ২০০৮ সালের শুমারিতে এ সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৬২ লাখ ১৯ হাজার। এছাড়া ১৯৯৬ সালে দেশে ২ কোটি ২২ লাখ, ১৯৮৪ সালে ২ কোটি ২০ লাখ ও ১৯৭৭ সালে ২ কোটি ৫ লাখ গবাদিপশু ছিল।  

সূত্র আরও জানায়, দেশে বর্তমানে ভেড়া ও ছাগলের সংখ্যা ২ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার। ২০০৮ সালের শুমারিতে এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৭৬ হাজার।

এছাড়া বর্তমানে দেশে মোরগ-মুরগী ও হাঁসের সংখ্যা ২৫ কোটি ৮২ লাখ ৩৮ হাজার। ২০০৮ সালের শুমারিতে এই সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৭২ লাখ ৪৩ হাজার। খামারে গবাদিপশু, হাঁস, মুরগির চাষ ও উন্নত জাত উদ্ভাবন এ উৎপাদন বৃদ্ধির প্রধান কারণ বলে জানায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।  এর ফলে দেশে ডিম, দুধ, ও মাংস সহজলভ্য হয়েছে বলেও জানায় তারা।   

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২০
এমআইএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।