বাণিজ্যিক চাষাবাদের চেয়ে এ অঞ্চলে বাড়িঘরের পাশের জমিতে শখ করে লিচু, আম ও কাঁঠালের গাছ লাগান অনেকেই। বিশেষ করে আম ও কাঁঠাল গাছ গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই চোখে পড়বে।
আগাম বৃষ্টি, ঝড় কিংবা কুয়াশার বালাই না থাকায় এবার চাষির পাশাপাশি বাড়ির পাশে শখের বশে লাগানো লিচু, আম ও কাঁঠালের গাছগুলোতে ফলন বেশ ভালোই হয়েছে বলে দাবি কৃষকের। বানারীপাড়া উপজেলার তেতলা গ্রামের বাসিন্দা সুলতান হাওলাদার জানান, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আম ও কাঁঠালের গাছ রয়েছে। যে গাছে আমের মুকুল টিকেছে সে গাছে প্রচুর আম ধরেছে, আবার গ্রামের বেশিরভাগ গাছেই ধরেছে কাঁঠাল। একই কথা জানান বরিশাল সদর উপজেলার লামচরির বাসিন্দা রাসেল হোসেন। তিনি জানান, তাদের গ্রামের বেশিরভাগ গাছে বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি কাঁঠাল ধরেছে।
অপরদিকে বরিশাল নগরের কালুশাহ সড়কের বাসিন্দা সোহেল বলেন, বাড়ির পাশের লিচু গাছে বিগত সময়ের চেয়ে এবার অনেক বেশি লিচু ধরেছে।
আর নগরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউজের দায়িত্বরতরা জানান, সামান্য পরিচর্যায় এবার বিগত সময়ের চেয়ে বেশি লিচু ধরেছে গাছগুলোতে।
স্বল্প পরিসরে চাষাবাদকারীদেরও দাবি, এবার সামান্য পরিচর্যায় বরিশালে আম, কাঁঠাল ও স্থানীয় জাতের লিচুর ফলন ভালোই হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এর উৎপাদন বিগত সময়ের চেয়ে বেশি হবে।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ফাহিমা বাংলানিউজকে হক বলেন, ফলন বা উৎপাদন বেশি হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি কাজ করে কৃষকের সচতেনতা। আগের চেয়ে আমাদের এ অঞ্চলে কৃষক অনেক সচেতন, ফলে যে কোনো ফসল কিংবা ফলের উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিচর্যা হচ্ছে যথাযথ। যেমন আগে ফল গাছে সার দেওয়ার বিষয়টিই জানতো না কৃষক, এখন আমাদের কারণে কৃষক সে সম্পর্কে জানতে পারছে এবং তা করছেও। তবে এবারে কুয়াশা না থাকায় লিচু ও আমের মুকুল তেমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, সঙ্গে আগাম বৃষ্টি না হওয়ায় এবং বড় ধরনের বিশেষ করে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত না হানায় গাছে আপাতদৃষ্টিতে ফলের উৎপাদন ভালো দেখাচ্ছে। আশাকরি শেষ পর্যন্ত এবার এ অঞ্চলে আম, কাঁঠাল ও লিচুর উৎপাদন বিগত সময়ের চেয়ে ভালো হবে।
এবার বরিশাল জেলায় ১ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে আম, ৬২২ হেক্টর জমিতে কাঠাল, ৯৭ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদের হিসাবে রয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩১ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২০
এমএস/এএ