ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে ধানের উন্নত জাত নিতে এবং কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সাথে নেপাল ‘সমঝোতা স্মারক’ (এমওইউ) স্বাক্ষর করতে চায় বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ডা. বংশিধর মিশ্র’র বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, নেপাল বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুরাষ্ট্র। নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের এ সম্পর্ক অটুট থাকবে। ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। নেপালের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে নতুন এসেছেন, বেশিদিন হয়নি। আমাদের মন্ত্রণালয়ে আজকে প্রথম আসলেন। নেপালের সঙ্গে কৃষিতে কিভাবে সহযোগিতা করতে পারি এবং দুই দেশ কিভাবে উপকৃত হতে পারে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষিক্ষেত্রে ও খাদ্য উৎপাদনে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। কৃষির অগ্রগতির ফলেই দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর খাদ্যের যোগান অব্যাহত রয়েছে। দেশে ১০০টির বেশি উন্নত জাতের ধান ও প্রযুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো মেগা ভ্যারাইটি। নেপাল এই জাতগুলো বাংলাদেশে থেকে নিতে পারে। এছাড়া দুদেশের মধ্যে কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ‘সমঝোতা স্মারক’ বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ড. আব্দুল রাজ্জাক বলেন, আমাদের দেশের মতোই নেপালে ধান খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাদেরও প্রধান খাদ্য ভাত। তারা মনে করে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে অনেক বেশি এগিয়ে আছে এবং গবেষণা করে অনেক ভালো-ভালো ধানের জাত উৎপাদন করেছে। সে ধানগুলোর উৎপাদনশীলতা অনেক ভালো। তারা মনে করে এই জাতগুলো নেপালেও উৎপাদন হতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, নেপালে অনেক মসলা উৎপাদন হয়। এছাড়া সেখানে কমলালেবুও উৎপাদন হয়। তাই এগুলো নেপাল থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি করতে পারে। এই মুহূর্তে নেপালের সঙ্গে যে ব্যবসা আছে তা খুবই কম। আমরা দু’দেশই চেষ্টা করছি কিভাবে ব্যবসা আরও বাড়াতে পারি। দু’দেশের মধ্যে রপ্তানি এবং কৃষিক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা বিনিময় করতে পারি।
ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে উল্লেখ করে নেপালের রাষ্ট্রদূত ডা. বংশিধর মিশ্র বলেন, নেপালের মানুষের প্রধান খাদ্য চাল। কিন্তু নেপাল চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়; বরং বছরে অনেক চাল আমদানি করতে হয়। সেজন্য বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চাল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশি ধানের জাত নেপাল নিতে চায়। এছাড়া বিভিন্ন ফসল, বীজ, উন্নত জাত, প্রযুক্তি, গবেষণাসহ কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহযোগিতার জন্য ‘সমঝোতা স্মারক’ স্বাক্ষর করা প্রয়োজন।
এছাড়া আদা, এলাচিসহ গরম মসলা বাংলাদেশে সরাসরি রপ্তানির আগ্রহ ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে ভারত হয়ে এসব পণ্য বাংলাদেশে আসে। ফলে বাংলাদেশে দাম অনেক বেড়ে যায়। সরাসরি বাংলাদেশে আসলে দাম অনেক কম পড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২১
জিসিজি/এইচএমএস