নওগাঁ: এ বছর নওগাঁর নদী চরের বালুতে তরমুজ লাগিয়ে ছিলেন চাষিরা। কিন্তু ক্ষেত থেকে এক টাকারও তরমুজ বিক্রি করতে পারেননি কৃষকেরা।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মহিষবাতান আত্রাই নদীর চরে ৩০ জন চাষি প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে তরমুজ লাগিয়ে ছিলেন। গাছগুলো থেকে ফল না পাওয়ায় পুরো খরচটাই তাদের লোকসান হয়েছে।
চরের তরমুজ চাষি হাতেম আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছর আমরা এই চরে তরমুজ চাষ করি। এ বছর আমি ২ বিঘা সমপরিমাণ জমিতে তরমুজ গাছ লাগিয়ে ছিলাম। শুরুর দিকে গাছ ভালোই ছিল। যখন তরমুজের গুটি আসা শুরু হল, তখন থেকেই ভাইরাস দেখা দেয়। পরে গাছের পাতা লাল হয়ে ধীরে ধীরে গাছও মরে যায়।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নানা রকম কীটনাশক প্রয়োগ করেও তাতে লাভ হয়নি। অনেক চাষির তরমুজ একটু বড় হলেও ভেতরে নরম অংশ গোটা গোটা হয়ে পচে যাচ্ছে। এ বছর ক্ষেতের সব টাকাই আমাদের লোকসান হয়েছে।
আরেক চাষি মোজাম্মেল বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বিঘা তরমুজ চাষে আমাদের খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। বীজ কেনা, কীটনাশক, পানি দেওয়াসহ অনেক খরচ হয় তরমুজ চাষে। এ বছর এই চরে কোনো চাষির তরমুজ হয়নি। সব ক্ষেতের গাছ মরে গেছে। এ বছর চাষিদের যে লোকসান হয়েছে তাতে করে সামনের বছর চাষ করা অসম্ভব। এরমধ্যে অনেক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে চাষ করেছেন। সেই টাকা কিভাবে শোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বাংলানিউজকে জানান, তরমুজ চাষে ব্যাপক পরিমাণের পানির প্রয়োজন হয়। যেহেতু এ বছর তাপদাহ বেশি, বৃষ্টির পরিমাণ কম এজন্য গাছগুলো মরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টি না হওয়ার কারণে নানা রকম ভাইরাসের আক্রমণ হয়। গাছগুলো মরে যাওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে পরিচর্যার অভাব। তবে আমরা চাষিদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২১
এনটি