মৌলভীবাজার: কৃষিকে ঘিরেই সন্তুষ্টি কৃষকের। দিনের পর দিন যত্নে লালিত প্রিয় ফসলটি যখন সফলতার মুখ দেখে তখন কৃষকের সীমাহীন আনন্দ হয়।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় এক মাঠে তিন জাতের হাইব্রিড তরমুজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন তিনি।
একই মাঠে তিনি চাষ করেছেন কালো, হলুদ এবং সবুজ ডোরাকাটা তরমুজ। তার এ কাজে সাহায্য করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সবচেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছেন হাইব্রিড ল্যনফাই জাতের তরমুজে। এ জাতের তরমুজের রঙ সবুজ ডোরাকাটা, এর ভেতরে হলুদ রঙের শাঁসযুক্ত। অন্যান্য তরমুজের তুলনায় এটি অধিক মিষ্টি। উত্তম পরিচর্যায় একেকটি তরমুজের ওজন হয় ৫ থেকে ৬ কেজি। বছরব্যাপী মাচায় ও মাঠে চাষ করা যায় এ তরমুজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ ফল পরিপক্ব হতে সময় লাগে ৬৫ থেকে ৭০ দিন।
তরমুজ চাষের ব্যাপারে কৃষক আব্দুল মতিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ২ কিয়ার (বিঘা) জমিতে এই তিন জাতের তরমুজ চাষ করেছি। এগুলোর নাম ‘ব্ল্যাক বেবি’, ‘মধুমালা’ ও অপরটি ‘ল্যনফাই’ জাতের হলুদে তরমুজ। গাছ লাগানোর প্রায় ৬৫ দিন পর সবগুলোতে ফসল এসেছে। তিন জাতের মধ্যে হলুদ রঙের লালতীর এবং ল্যনফাই জাতটির সর্বাধিক ফলন হয়েছে। ফলের ওজন এবং আকার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শুধু আকার নয়, এর স্বাদও অসাধারণ। মধুর মতো মিষ্টি এটি। বাজারে এর দরও ভালো পাচ্ছি। প্রতি পিস ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি।
তিনি আরও জানান, ল্যনফাই জাতটির ফলন অন্যান্য জাতের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি হয়েছে এবং এটি অন্যান্য তরমুজের চেয়ে অনেক বেশি মিষ্টি। তাই আগামীতে তিনি ব্যাপকভাবে এই জাতের তরমুজ চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
ফলন দেখতে তার জমি পরিদর্শন করেন স্থানীয় কৃষকরা। তারাও আগামীতে এ জাতের তরমুজ চাষ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এই তিন জাতের তরমুজ চাষ করতে আব্দুল মতিনের এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার টাকা। আর এখন পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। মাঠে যে পরিমাণ ফসল রয়েছে এতে তিনি আরও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বাংলানিউজকে বলেন, আব্দুল মতিনের তরমুজ খেত পরিদর্শনে এসে খুবই ভালো লেগেছে। আমিই উনাকে তরমুজের বীজগুলো দিয়েছিলাম। এখানে তিন জাতের বীজ লাগানো হয়েছে, এর মধ্যে ল্যনফাই জাতটির ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আব্দুল মতিনের এ বাম্পার ফলন দেখে হাইব্রিড বীজ অনান্য উপজেলায়ও বিস্তৃত করবেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, জাতটি চাষ করতে প্রতি শতকে বীজের পরিমাণ লাগে ১ গ্রাম। উত্তম পরিচর্যাতে প্রতি একরে ফলন হয় ৩০ থেকে ৩৫ টন। ভালো দাম পেলে কৃষকরা এ তরমুজ চাষে আগ্রহী হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২১
বিবিবি/এএটি