ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

পানির নিচে তলিয়ে গেল কৃষকের স্বপ্ন

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
পানির নিচে তলিয়ে গেল কৃষকের স্বপ্ন

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে আলু উৎপাদন করেছেন মাত্র আর কয়েকদিন পর ঘরে তুলত আলু। ঠিক সেই সময় আষাঢ় মাসের বৃষ্টির মতো মাঘ মাসের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেল কৃষকের স্বপ্ন।

পানির নিচে থাকা কাদামাটি মাখা সেই আলুগুলো একটি একটি করে খুঁজে তুলছেন এখন তারা। মাঘ মাসের ভারী বৃষ্টির কারণে অনেক আলু জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে এতে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়েছে।  

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকার আলু বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেক কৃষকের আলু পানির নিচে তলিয়ে গেছে তারা জানিয়েছেন মাঘ মাসে বৃষ্টি হওয়ায় সমস্ত আলু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আলুর যে খরচ হয়েছে, সেই টাকাই হয়তো উঠবে না। এবার হয়তো আর ঋণের বোঝা মাথা থেকে সরবে না। শেষ মুহূর্তে বৃষ্টি হয় আমরা আলুচাষিরা প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হলাম।

পানির নিচে তলিয়ে থাকা আলুগুলো এভাবেই আর কয়েকদিন থাকলে সমস্ত আলু পঁচে যাবে। তাই আমরা এখন লোক দিয়ে কাদামাটি মাখা সেই আলুগুলো একটি একটি করে খুঁজে তোলা হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের আলুচাষি সমেশ আলী জানান আলু উৎপাদনের সময় তিন মাস । তিন মাসের মধ্যেই আলু তুলতে হয়।

আলুর শেষ সময়ে আমরা ঘরে তুলতে পারলাম না। মাঘের সেই ভারী বৃষ্টিতে এলাকার সমস্ত আলু পানির নিচে তলিয়ে যায়। এভাবে পানির নিচে আর কয়েকদিন থাকলে হয়তো আলু খুঁজে পাওয়া যাবে না। এবার আলু করে শেষ সময়ে বৃষ্টি হয়ে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওই এলাকার আরেক আলুচাষি জয়নুল জানান , এবার আমাদের কপাল পোড়া, কিছু টাকা লাভের আশায় ধার-দেনা করে মানুষের কাছে জমি বন্ধক দিয়ে আলু চাষাবাদ শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে দিল মাঘের সেই ভারী বৃষ্টি।

আরেক আলুচাষি ওমর ফারুক জানান, প্রচন্ড বৃষ্টি হয় আলুর জমিতে পানি লেগে আছে । যতটুকু আলু হয়েছে সেই আলোগুলো না তুললে দুই-একদিনের মধ্যে আলু না তুললে পচে যাবে। পানির নিচে থাকা আলুগুলো তুলতে হচ্ছে। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। এক বিঘা জমিতে আলু উৎপাদনের খরচ হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।

ঠাকুরগাঁও কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬শ হেক্টর জমিতে আলু রোপন করা হয়েছে।  

ঠাকুরগাঁও কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হাসেন বলেন, এবার জেলার প্রথমদিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুর ফলন ভালো ছিল। তবে অসময়ের বৃষ্টিতে অনেক আগাম জাতের আলু নষ্ট হয়েছে।  

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।