ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

অন্যের প্লটে টমেটো চাষ করে আয় করলেন ৪ লাখ টাকা 

জিএম মুজিবুর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
অন্যের প্লটে টমেটো চাষ করে আয় করলেন ৪ লাখ টাকা  ঝুড়িতে টমেটো তুলছেন আওকাত।

ঢাকা: রাজধানীর পাশেই উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর। সেখানে থাকা প্লট মালিকের অনুমতি নিয়ে (বাহুবলী) টমেটো চাষ শুরু করেন আশুলিয়া রোস্তমপুর গ্রামের মোহাম্মদ আওকাত (৪৭)।

তিন বিঘা জমিতে ৭ হাজার ৫শ টমেটের চারা লাগিয়েছিলেন তিনি, চারা লাগানোর পর থেকে ঠিকমতো পরিচর্যা ও ওষুধ পানি দিলে মাত্র ৫০ দিনের মাথায় টমেটো ধরতে শুরু করে। সবমিলে ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। তিন মাসের মধ্যেই টমেটোর চাষ শেষ হয়ে যায়, এবং গাছও মারা যায়। সবমিলিয়ে তিনি এবার টমেটো বিক্রি করে চার লাখ টাকা করেছেন। মোহাম্মদ আওকাত বাংলানিউজকে বলেন, ছোটবেলায় বাবা-মা হারিয়েছি, ভাইয়ের সংসারে বড় হয়েছি, অন্যের ক্ষেতে দিনমজুরির কাজ করে বউ ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। কী করবো দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। কারণ নিজের ভিটে বাড়ি টুকু ছাড়া তো আর কিছুই নেই! তাই অন্যের জমি ম্যানেজ করে একটু একটু করে কৃষি কাজ করতে শুরু করেছিলাম ১২ বছর আগে।

আমার বাড়ি নদীর ওপারে আশুলিয়া থানার রোস্তমপুর গ্রামে। ওপারে চাষবাস করতাম কিন্তু জমি জায়গা না পেয়ে এপারে তুরাগ থানার পাশেই এই বড় বড় প্লটের মালিক স্যারদের সঙ্গে দেখা করে তাদেরকে বুঝিয়ে এবার আমি তিন বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। গতবছর ভালো ফলন পাইনি এবার আশা করছি চার লাখ টাকার ওপরেই বিক্রি করতে পারব ইনশাআল্লাহ। বাহুবলী জাতের টমেটোতে ফলন অনেক বেশি, প্রতি গাছে ৮-১০ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।
বাহুবলী টমেটোর চারা লাগানো ও সেচ দেওয়া, সবমিলে আমার ৯০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। নিজের টাকা পয়সা না থাকায় ঋণ করে আমি এই চাষবাস করেছি। তবে, আল্লাহর রহমতে আমি এবার ভালো ফলন পেয়েছি। আমার দুইটা বাচ্চা একজন পড়াশুনা করে, আরেকজন ছোট।

এই ছোট পরিসরে চাষবাস করেই সবার দোয়াতে ভালো আছি। তবে জমির মালিকদের কিছুই দেওয়া লাগে না। স্যারেরা আমাকে বলেছে তুমি চাষবাস করে খাও কোন অসুবিধা নেই। আমার জমির মালিক স্যারেরা অনেক ভালো, যখন আসেন তখন ক্ষেতে যে ফসল থাকে তাই কিছু দিয়ে দেয়, তাতেই স্যারেরা খুশি হয়ে যায়। বিক্রি করেন কোথায় কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিক্রি করতে কষ্ট পেতে হয় না। ক্ষেত থেকে বেপারিরা এসে নিয়ে যায়। কারওয়ানবাজার ও মিরপুর ১ নম্বর পাইকারি মার্কেটে, আমার মার্কেটেও যাওয়া লাগে না। এবছর প্রতি কেজি ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে পারছি, তবে সবচেয়ে বড় কথা আমার নিজের হাতে লাগানো টমেটোতে কোনো ধরনের কেমিক্যাল দেওয়া ছাড়াই সরাসরি গাছ থেকে উঠিয়ে আমি বাজারে পাঠিয়ে দিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
জিএমএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।