ময়মনসিংহ: রোপণ করার পর মাত্র ১১০ দিনেই কৃষকের গোলায় উঠানো যায় বিনা-১৭ জাতের ধান। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউ (বিনা) উদ্ভাবিত খরা সহিষ্ণু এ ধানের ফলনও ভালো।
বিনার বিজ্ঞানীরা জানান, চীন, ইরি এবং বিনা যৌথ গবেষণা করে অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে বিন-১৭ ধান উদ্ভাবন করেছে। রোগ-বালাই সহনশীল এ ধান চাষে ইউরিয়া সার তুলনামূলক অনেক কম লাগে। সেইসঙ্গে অর্ধেক পানি সাশ্রয়ী। অধিক ফলনশীল বিনা-১৭ কে বলা হয় ‘গ্রিন সুপার রাইস’। এ জাতের ধান ‘মেগা ভ্যারাইটি’ হবে বলেও জানান বিজ্ঞানীরা।
কৃষকরা জানান, সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান কর্তন করা হয়। কিন্তু নতুন জাতের বিনা-১৭ ধান আশ্বিন মাসেই কর্তন হচ্ছে। ধানের রংও ভালো।
বিনা থেকে ১০ কেজি বীজ নিয়ে ১৫ শতাংশ জমিতে বিনা-১৭ রোপণ করেছিলেন জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার বড়গ্রাম ইউনিয়নের কেজাইকান্দা গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দিন। তার আশপাশের জমিতে এখনো ধান গাছে শীষ না ছাড়লেও পাকতে শুরু করেছে বিনা-১৭ ধান। এতে ফলনও হয়েছে ভালো।
একই ধরনের তথ্য দিয়েছেন কৃষক মো. সিরাজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকেই।
বিনা সূত্র জানায়, বিনা-১৭ ধান চাষে প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ টন ধান পাওয়া যায়। রোপণের ১১০ দিনেই কাটা যায় এ ধান। সেইসঙ্গে জমিতে বিনা-১৭ রোপণ করেও কমপক্ষে তিন থেকে চারটি ফসল অতিরিক্ত করে বোরো আবাদ করা সম্ভব। এতে করে কৃষকদের আয় বাড়বে।
কৃষিবিদ একেএম আজিজুল হক দুদু বলেন, কিছটুা ভীতি নিয়ে নতুন জাতের এ ধান রোপণে এগিয়ে এসেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু ফলন হয়েছে প্রত্যাশার অনেক বেশি। আশা করছি খুব দ্রুত এ ধান জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক উদ্ভাবক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে চ্যালেঞ্জ নেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে বিনা-১৭ ধান সারাদেশ ব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চলেও এ জাতের ধানটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
এসআরএস