নীলফামারী: নাম পাগলিমার হাট। প্রতিদিনই এই হাটে উঠছে কাঁচা মরিচ।
ডোমারর উপজেলার পাঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়নের মুছার মোড় এলাকায় পাগলিমার হাটের অবস্থান।
মরিচের এই হাটে ডোমার, ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার শত শত মরিচচাষি ও ব্যবসায়ী আসেন। শুধু মরিচ ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠা পাগলিমার হাটে রয়েছে অর্ধশত আড়ত। দূর-দূরান্তের ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় এ আড়ত সবসময় সরগরম থাকে।
ভোর থেকে শুরু এই বাজার চলে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত। গড়ে প্রতিদিন হাটে ১২ থেকে ১৫ হাজার কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়। সেই হিসাবে প্রতিদিনই দেড় কোটি টাকার মরিচ বিক্রি হয় বাজারটিতে। এতে করে ওই এলাকাগুলোর মরিচচাষিরা উপকৃত হচ্ছেন।
ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখর হাট। কেউ মরিচ বস্তাবন্দি করছেন, কেউ আবার টাকা গুনছেন। এখানে বিন্দু মরিচ, সাপ্লাই মরিচ, ডেমা মরিচ, ডেমা হাইব্রিড মরিচ, জিরা মরিচসহ দেশি মরিচ পাওয়া যায়। তবে, প্রকারভেদে এসব মরিচ প্রতি মণ ১৩০০-১৭০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে, কোনো কোনো দিন আমদানির তুলনায় চাহিদা বেশি হলে দাম একটু বেশি থাকে।
এ কাজে সংশ্লিষ্ট সবার জীবনে একটা পরিবর্তন এসেছে। মরিচচাষিরা আসছেন, ক্রেতারা আসছেন, সবমিলিয়ে জমজমাট কাঁচা মরিচের হাট।
হাটে কথা হয় ডোমারের সোনারায় ইউনিয়নের মরিচচাষি আশেক আলীর সঙ্গে।
তিনি নিজের ক্ষেতের মরিচ ভ্যানে করে হাটে নিয়ে এসেছেন। ভালো দামে তা বিক্রি করেছেন। প্রতিকেজি মরিচ বিক্রি করেছেন ৩০ টাকা করে। এই দাম শেষ পর্যন্ত থাকলে তার মতো অনেক চাষি লাভবান হবেন বলে জানালেন। তবে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকাটাও একটা ফ্যাক্টর।
ডিমলার নাউতারা ইউনিয়নের মরিচচাষি তারা মিয়া বলেন, দিনে মরিচ বেচে দিনেই বাড়ি ফিরছি। চোর, ডাকাত কিংবা ছিনতাইকারীর কোনো ভয় নাই।
হাটের আড়তদার সমিতির সভাপতি এনতাজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, উত্তরের জনপদের ডোমারে পাগলিমার হাটে মরিচের মৌসুমে প্রতিদিন হাট বসে। দিনে ৮ থেকে ১০ হাজার মণ মরিচ কেনাবেচা হয়। এখানকার মরিচ সিরাজগঞ্জ, পাবনা, যশোর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। এ হাট উত্তরাঞ্চলে মরিচের জন্য বিখ্যাত। সকাল সকাল হাটে মরিচ কেনার জন্য পাইকাররা আসেন। স্থানীয় হাট কমিটি নিরাপত্তাসহ সার্বিক দিক তদারকি করছেন। ফলে হাটটি মরিচের হাট হিসেবে ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২২
এএটি