ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

তরমুজের বাম্পার ফলন, তবুও ভালো নেই কৃষক

জি এম মুজিবুর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
তরমুজের বাম্পার ফলন, তবুও ভালো নেই কৃষক

ঢাকা: এই গরমে তরমুজ দেবে শীতল অনুভূতি। তাই তো সতেজ থাকতে চৈত্রের গরমে এই ফলের চাহিদা সব থেকে বেশি।

কেবল প্রশান্তি পেতেই নয়, স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায়ও তরমুজ এগিয়ে। তরমুজে আছে লাইকোপেন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পানি। এছাড়া এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট।

মজার ব্যাপার হলো, আর এসব উপাদানের উপকারিতাও কিন্তু বিশাল। গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট স্ট্রোকের মতো ঝুঁকি কমায় আর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তরমুজে ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই নেই।

অন্যান্যবারের তুলনায় এবারও দক্ষিণাঞ্চলের জেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবুও হতাশায় আছেন তরমুজ চাষিরা জানিয়েছেন বরিশালের কৃষক মো. শাকিল হোসাইন খান। বরিশালের গলাচিপায় তার বাড়ি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাপ-দাদারা সবাই তরমুজ চাষ করতেন। আমিও আট-দশ বছর ধরে তরমুজ চাষ করে আসছি। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার ফলন ভালো কিন্তু, যে পরিমাণ টাকা খরচ করেছি সেই পরিমাণ টাকা বিক্রি করতে কষ্ট হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ১২৭ কিলোমিটার ঘুরে ঢাকায় আসতে হচ্ছে। এতে করে আট থেকে ১০ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া বেশি লাগছে।  পাশাপাশি একটা গাড়ি ঢাকায় পৌঁছাতে আরও ৮ হাজার টাকার মতো রাস্তায় নানাবিধ চাঁদা দিয়ে আসতে হয়।  শুধু ট্রাক ভাড়া দিতে হয় ৩৭/৩৮ হাজার টাকা। তরমুজের বীজ থেকে শুরু করে লাগানোর সব খরচ। ১০ কানি জমিতে প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে আশা করতেছি ৩০ লাখ টাকার বিক্রি করতে পারব ইনশাআল্লাহ।

হযরত শাহজালাল (রহঃ) বাণিজ্য ভাণ্ডারের পরিচালক মো. মনির হোসেন মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, বহুদিন ধরে এখানে আড়ত।  দাবি করে আসছি অন্যান্যবারের তুলনায় তমুজের ফলন এবার অনেক ভালো।  বেচাকেনাও ভালো।  আশা করি অন্যান্য বাজার থেকে এবারের পাইকারি বেচাকেনা ভালো হবে এবং কৃষকও লাভবান হবে। মিরপুর ১ নম্বর এলাকায় ভ্যানে ও ফুটপাতে তরমুজ বিক্রি করেন মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা আড়ত থেকে পিস হিসাবে কিনে আনি এবং এখানের দোকানগুলোতে কেজিতে বিক্রি করতে হয়। কারণ অন্যান্যবারের তুলনায় এবারের দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। এতে আমাদের ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের লাভ কম হচ্ছে।

মিরপুর ১ নম্বর ফলের মার্কেটের তরমুজ কিনতে আসা মো. শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও কয়েকদিন কিনা হয়েছে। তবে অন্যান্যবারের তুলনায় দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। তারপরও প্রতিবছর বাজারে তরমুজ উঠলেই যখন যে দাম হয় তখন সেই দামে কেনা ছাড়া তো আমাদের আর কোন উপায় থাকে না। আমাদের কাছ থেকে মাঝারি সাইজের তরমুজ প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, অথচ তারা কিনছে পিস হিসাবে। তবে আমার মনে হয় কেজিতে না কিনে যদি পিস হিসাবে বেচাকেনা হতো তাহলে আমাদের মত কাস্টমারদের একটু ভালো হতো। অনেক মার্কেটে বড় তরমুজের দাম আবার ৭০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
জিএমএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।