পাবনা, (ঈশ্বরদী): সবজির ভাণ্ডার হিসেবে বেশ পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা। এই উপজেলায় পাইকারিতে প্রতিকেজি মূলা পাঁচ টাকায় বিক্রি করছেন কৃষক।
বিঘা প্রতি কৃষকের চাষাবাদে খরচ পড়েছে ৪০ হাজার টাকা। তবে এখন বিঘা প্রতি মূলা বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়। বিঘা প্রতি ২৮ হাজার টাকা লসে বিক্রি হওয়ায় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করছেন কৃষক।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তারা জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রতিকেজি মূলা বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। কিন্তু এখন সেই মূলা বিক্রি হচ্ছে ৫/৬ টাকা কেজিতে।
ঈশ্বরদী কাঁচাবাজারের পাইকারী বিক্রেতা মামুন-উর রশীদ (৩৫) বাংলানিউজকে বলেন, ঈশ্বরদী শহরে সবজি আড়তগুলোতে মুলা পানির দামেও বিক্রি হচ্ছে না। সপ্তাহখানেক আগে মূলার চড়া দাম ছিল। তখন কিন্তু ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। হঠাৎ করে চলতি সপ্তাহে ৫/৬ টাকা কেজি হয়ে গেল!
ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁহাপুর ইউনিয়নের চর-কদিমপাড়া গ্রামের কৃষক কিসমত প্রমাণিক (৩৮) আক্ষেপ করে বাংলানিউজকে বলেন, এবছর আমি ১২ বিঘা জমিতে মূলার আবাদ করেছি। ঈশ্বরদীতে কেউই মূলা কিনছেন না। তাই ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। শুরুতে মূলার দাম বেশ ভালো ছিল।
কৃষক কিসমত বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে মূলা চাষে খরচ করেছি প্রায় ৪০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ৬০ মণ ফলন হয়। আমি ২০ টাকা কেজিও বিক্রি করতে পারতাম, বিঘা প্রতি আমার ৮ হাজার টাকা লাভ হতো। ঈশ্বরদীর বাজারে এখন প্রতিকেজি মূলার দাম ৫ টাকা! হঠাৎ কেজিপ্রতি ৪০ টাকা কমে গেছে। ঈশ্বরদীতে বিঘা প্রতি মূলা বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়। বিঘা প্রতি ২৮ হাজার লস! ঢাকায় পাঠাতে পারলে কিছু বাড়তি আসবে। সাঁড়া ইউনিয়নে গোপালপুর গ্রামের কৃষক রুবেল হোসেন বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে মূলা চাষ করেছি। কিন্তু বাজারে এখন মূলার দাম নেই বলেই চলে। ক্ষেতেই পড়ে আছে মূলা। আমি নিজেই পরিশ্রম করেছি। আর দাম না বাড়লে বেশ ক্ষতি হবে।
ঈশ্বরদীর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বাংলানিউজকে বলেন, এবার উপজেলায় ৪২৫ হেক্টর জমিতে মূলার আবাদ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মূলার বাম্পার আবাদ হয়েছে। কয়েকদিন বৃষ্টিতে দাম কমেছে। আবার ঠিক হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২২
এএটি