কম্পাস
তুমি দক্ষিণে যখন
আমার কম্পাস তখন দক্ষিণমুখী
কে যেন ঘুরিয়ে দেয়;
তুমি যখন পশ্চিমে যাও
কম্পাসটা তখন নিঃশব্দে ঘুরে যায়
সূর্যাস্তের দিকে—
উত্তরের শাশ্বত সূত্র তখন
বোকা ঈশ্বরের হাত ফসকে বেরিয়ে যায়!
হৃদয় যখন গভীর গিরি খাদে
আটকে পড়ে—
নৈঃশব্দ্যের বাতাবরণে
দেহখণ্ডে তখন দুলতে থাকে
তোমার কম্পাস দু’টি
তুমি উন্মুক্ত হতে চাও...
বয়স
বয়সী প্রেম হামাগুড়ি দিয়ে দেখতে চায়
আমাদের বয়স কত হলো
আমরা কি বয়সের কাছে নতজানু—
নাকি বয়স আমাদের কাছে?
ইথারে ইথারে যে প্রেম ছড়িয়ে দিচ্ছি
তা কি ফলবতী বৃক্ষের মতো
জন্মান্তর রেখে যাবে—
নাকি এখানেই শেষ?
লব্ধ যৌবনে যখন তুমি যৌবতী ‘বেহুলা’
তোমার ‘সোনার বাসর ঘর’
আঁটসাট করে আঁটা
তখনই নেড়েছি কড়া—
বয়স হয়েছে বেশ, তোমারও বয়স হলো
অপরাহ্নে দিলে ধরা—
কয়েক দিনের ভুলে..
ও আমার নষ্ট জীবন
ও আমার ল্যাংটা জীবন
তোর লজ্জা গেছে, সজ্জা গেছে
শরম গেছে, বিছনা গেছে
বাস্তুচ্যুত সুখের আশায় ঘর হারালি
শীতের রাতে কম্বলের সুখ
তাও হারালি..
প্রিয়তমার রোষ বাড়ালি
আদর-যত্ন তুমুল কামে
মুহূর্তের ভুল, হঠাৎ ভ্রমে
অকালে তুই কুল হারালি
ও আমার ল্যাংটা জীবন—
ঘরের সুখে বেড়া দিয়ে
বাইরের সুখের দেওয়াল ধরে
নির্ঘুম তুই রাত কাটালি
ভাঙার আশায়—
ভাঙল না তো!
ভাঙল স্বপ্ন, রাত হলো ভোর
তবুও তোর কাটল না ঘোর
শূন্য হাতে ফিরলি যখন,
সব দরজা বন্ধ তখন—
ও আমার নষ্ট জীবন...
প্রস্তাব ও পরাজয়ের কবিতা
তুমি আমার শয্যাশায়িনী হও
কোনো অঙ্ক না কষে,
চলো খুঁজে নিই আমরা দু’জন
যে দিনগুলো বৃথা গেছে।
তোমাকে নদী ভেবে দিয়েছি সাঁতার
ডুবসাঁতারে খুঁজে চলছি
বাস্তুচ্যুত সুখ,
ও আমার বয়সী প্রেমছাতা
ও আমার ঘাসফুল—দূর্বালতা
কেন হতে চাও বৈমুখ?
কে তোমাকে বেঁধেছে বলো
কোন সে প্রেমলতায়—
ও বাঁধন ছিড়লে না হয়
আমার ব্যাকুলতায়!
যখনই তোমার নিটোল শরীর
ছুঁয়েছে কঙ্কল এ হৃদয়,
তখনই জন্মেছে প্রেম—
অসুখ-বিসুখ,
ঠিক তখনই পরাজয়।
অভ্যাগত
জীবনের বালুকা বেলায়
যেটুকু দিয়েছো তুমি
তাতে শুধু প্রেম ছিল না
ছিল কিছু কাম
কিছু ছিল ভণ্ডামী।
ভণ্ডের মতো গ্রহণ করেছি
অথবা সাধুর মতো,
জেনে গেছে আমি—
আমি ছিলাম তোমার
পরম অভ্যাগত।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৬