[১৯৫৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী আর্নেস্ট হেমিংওয়ে তার বিখ্যাত ‘কিলোমাঞ্জারোর তুষার’ গল্পটি লিখেছিলেন ১৯৩৮ সালে। এটিকে বিশ্বের সর্বেকালের সেরা গল্পের তালিকায় বেশ ওপরের দিকেই ঠাঁই দেন সাহিত্যবোদ্ধারা।
এতে তিনি মন্তব্য করেছেন, রাজনীতি, নারী, সুরা, অর্থ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমেরিকার লেখকদের নষ্ট করে দিচ্ছে। ধনী লোকজনরে সঙ্গে মাখামাখি তার লেখকসত্তার ক্ষতি করছে। এই বোধ স্পষ্টতই ফুটে উঠেছে গল্পটিতে। ব্যাপকার্থে, গল্পটিকে একজন লেখকের হারানো প্রজন্মের স্মৃতিচারণের উদাহরণ হিসেবে নেওয়াই সঙ্গত। যাদের ছিলো বিশ্বযুদ্ধ ও স্পেনের যুদ্ধ-অভিজ্ঞতা, যেসব যুদ্ধ তাদের মনে নৈতিকতা ও দর্শন নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। একের পর এক স্মৃতিচারণে গল্পের নায়ক স্মরণ করতে থাকে বুলগেরিয়া ও কনস্টান্টিনোপলের পর্ববতমালা এবং একই সঙ্গে প্যারিসের একাকিত্বের দুঃসহ অনুভূতি আর ভেতরটা হঠাৎ করেই শূন্য হয়ে ওঠা।
খাটে শুয়ে শুয়ে গল্পের নায়ক সর্তক হয়ে ওঠে, যখন তার অস্থায়ী তাঁবুর চারপাশে শকুন হাঁটতে দেখে। ছায়ার ভেতর একটি হায়নোর আনাগোনা টের পায়। জেগে ওঠার আগেই মরে যাবো এটা জেনেই সে ঘুমাতে যায় এবং স্বপ্ন দেখে- একটি উদ্ধার বিমান তাকে তুষারাবৃত কিলোমাঞ্জারোর চূড়ায় নিয়ে গেছে। গোটা আফ্রিকায় যেটি সবচেয়ে উঁচু পর্বত। তার স্ত্রীরও স্বপ্নদেখা ঘুম ভেঙে যায় হায়েনার বিদঘুটে শব্দে। তাঁবুর বাইরে হায়েনাটা কেঁদে ওঠে অদ্ভূতভাবে। সে কান্নাটা মানুষের মতো। ]
কিলোমাঞ্জারোর তুষার
মূল: আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
ভাষান্তর: মনজুর শামস
পর্ব-৪
ঐ যে, সে এখন আসছে। খাটে শুয়ে শুয়ে মাথা ঘুরিয়ে হ্যারি তার দিকে তাকালো। ‘হ্যালো’, হ্যারি বলে উঠলো।
‘আমি একটি টমি র্যাম (গজলা হরিণ) গুলি করে মেরেছি। ’ সে তাকে বললো। ‘কুক তোমাকে ভালো সুরুয়া রেঁধে দেবে এবং আমি তাতে গুঁড়োদুধ ক্রিমের সঙ্গে আলু থেঁতো করে দেবো। তোমার এখন কেমন লাগছে?’
‘আগের চেয়ে অনেক ভালো। ’
‘ব্যাপারটা কি চমৎকার নয়? তুমি তো জানো যে আমি ঠিকই মনে করতাম তুমি হয়তো সেরে উঠবে। আমি যখন বাইরে যাই তখন তুমি ঘুমিয়ে ছিলে। ’
‘আমি খুব ভালো একটা ঘুম দিয়েছি। তুমি কি অনেক দূরে চলে গিয়েছিলে?’
‘না। পাহাড়ের পেছনদিকটায়। টমিটাকে আমি খুব ভালো নিশানা করে গুলি করেছিলাম। ’
‘তুমি জানো, তুমি খুব চমৎকার গুলি ছোড়ো। ’
‘আমার এটা ভালো লাগে। আমি আফ্রিকাকে ভালবাসি। সত্যিই। তুমি যদি একেবারে সুস্থ হয়ে ওঠো তাহলে আমার এতটাই আনন্দ লাগবে, কখনও যতটা লাগেনি। তুমি জানো না, তোমার সঙ্গে শিকার করাটা কতখানি মজার!’
‘আমিও শিকার করতে ভালবাসি। ’
‘তুমি জানো না, লক্ষীটি তুমি আগের চেয়ে ভালো বোধ করছো। এটা কী চমৎকার ব্যাপার। তুমি ওভাবে শিকার করা ছেড়ে দিলে আমি তা কিছুতেই মানতে পারিনি। তুমি আমার সঙ্গে কখনও ফের ওভাবে কথা বলবে না। বলবে? আমাকে কথা দাও আর বলবে না।
‘না’, সে বললো। ‘আমি মনে করতে পারছি না কী বলেছিলাম। ’
‘তুমি কিছুতেই ওভাবে আমাকে ধ্বংস করে দেবে না। দেবে কি? আমি কেবলই মাঝ-বয়সী এক নারী যে তোমাকে ভালবাসে এবং তা-ই করতে চাই, যা তুমি করতে চাও। এরই ভেতর আমি দুই থেকে তিনবার মিসমার হয়ে গেছি। তোমার আমাকে আর মিসমার করতে চাওয়া উচিৎ নয়। উচিৎ কি?’
‘আমি তোমাকে বিছানায় কয়েকবার ধ্বংস করতে চাই। ’ সে বললো।
‘হ্যাঁ। ওটা খুব ভালো একটা ধ্বংসযজ্ঞ। ওভাবে ধ্বংস হওয়ার জন্যই আমরা পয়দা হয়েছি। বিমানটি কালকেই এখানে আসবে। ’
‘তুমি কী করে জানো?’
‘আমি নিশ্চিত। এটাকে আসতেই হবে। চিহ্ন তৈরি করার জন্য ছেলেরা এরই মধ্যে কাঠ ও ঘাস জড়ো করেছে। আমি আজ গিয়ে আবারো দেখে এসেছি। বিমানটি ল্যান্ড করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে এবং আমাদের দুই প্রান্তেই কাঠ ও ঘাস দিয়ে আগুন জ্বেলে চিহ্ন তৈরি করতে হবে। ’
‘কী থেকে তুমি ধরেই নিলে যে কাল এটি আসবে?’
‘আমি নিশ্চিত যে বিমানটি আসবে। এরই মধ্যে এটি আসার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেছে। অবশ্যই এটি এখন আসবে। আর তার পরেই শহরে। ওরা তোমার পা ঠিক করে দেবে। তারপর আমরা খুব ভালো করে ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠবো। ওই ধরনের ভয়ঙ্কর কথাবার্তা আর নয়। ’
‘আমরা কি একটু ড্রিঙ্ক করে নিতে পারি? সূর্য ঢলে পড়েছে। ’
‘তুমি কি মনে করো আমাদের এখন ড্রিঙ্ক করা উচিৎ?’
‘আমি এক পেগ নিচ্ছি। ’
‘আমরা একসঙ্গে ড্রিঙ্ক করবো। মোলো, হুইসকি আর সোডা নিয়ে এসো। ’ ভৃত্য-বালকটিকে ডেকে সে বললো।
‘তোমার মশা-নিরোধ বুট পরে নেওয়াই ভালো। ’ হ্যারি তাকে বললো।
‘আমি গোসলের আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করবো...’
যখন অন্ধকার নেমে আসছিলো। তারা তখন ড্রিঙ্ক করলো আর চারপাশটা পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে আসার ঠিক আগমুহূর্তে যখন আর গুলি ছোড়ার মতো যথেষ্ট আলো নেই, তখনই একটি হায়েনা খোলা জায়গাটা পেরিয়ে পাহাড়ের আশপাশে তার পথ ধরলো।
‘ওই বেজন্মাটা রোজ রাতেই ওখান দিয়ে যায়। ’ হ্যারি বলল। ‘দু’সপ্তাহ ধরে, প্রতিরাতে। ’
‘রাতে ওই কর্কশ শব্দ করে। আমি অবশ্য এতে কিছু মনে করি না। যদিও ওটি একটি জঘন্য নোংরা বুনো জন্তু। ’
একসঙ্গে ড্রিঙ্ক করছিলো তারা। এখন কোনো ব্যথা নেই, শুধু একই অবস্থানে শুয়ে থাকার অস্বস্তিটুকু ছাড়া। ছেলেরা একটি আগুন জ্বেলেছে। এর ছায়া লাফালাফি করছে তাঁবুতে। হ্যারি এই জীবনের প্রতি তার আনন্দময় আত্মসমর্পণের মৌনসম্মতিটা ফিরে আসার অনুভূতি টের পাচ্ছে। তার এই প্রেমিকা তার প্রতি খুবই আন্তরিক। দুপুরে তার সঙ্গে সে খুব বর্বর ও অন্যায় আচরণ করে ফেলেছে। সে খুবই চমৎকার এক নারী, সত্যিই চমৎকার। আর ঠিক তখনই তার মনে হলো যে সে মরতে চলেছে।
একটি তোড়ের সঙ্গে এটি এলো। বাতাস বা পানির তোড়ের মতো নয়; কিন্তু হঠাৎ করেই শূন্যতার এক বিটকেলে গন্ধ, এবং বিচ্ছিরি ব্যাপারটি হচ্ছে। হায়েনাটা আলগোছে তাঁবুটার প্রান্ত দিয়ে সটকে পড়ল।
‘কী এটা, হ্যারি?’ নারী তাকে জিজ্ঞেস করলো।
‘কিছু না’, সে জবাব দিলো। ‘তোমার বরং অন্য পাশটাতে চলে যাওয়াই ভালো। যে দিক থেকে বাতাস আসছে সেই দিকটায়। ’
‘মোলো কি তোমার ড্রেসিংটা বদলে দিয়েছে?’
‘হ্যাঁ। আমি এখন কেবল বরিক ব্যবহার করছি। ’
‘এখন কেমন বোধ করছ?’
‘কিছুটা অস্থির লাগছে। ’
‘আমি গোসল করতে যাচ্ছি’, নারী বললো। ‘আমি এক্ষুনি বেরুচ্ছি। তোমার সঙ্গে খাবো এবং তারপর খাটটাকে আমরা ভেতরে নিয়ে রাখবো। ’
সুতরাং মনে মনে হ্যারি বলল, ঝগড়াটা থামাতে আমরা ভালো ব্যবস্থাই নিয়েছি। এই নারীর সঙ্গে সে কখনও খুব বেশি একটা ঝগড়া করেনি। যেখানে অন্য যে মেয়েদের সঙ্গে সে প্রেম করতো তাদের সঙ্গে এত্ত বেশি ঝগড়া করতো যে, সব সময়ই শেষমেশ ঝগড়ার ক্ষয় ধরানো ব্যামোটা তাদের একসঙ্গে থাকার সম্পর্কটাকে মেরে ফেলতো। সে খুব বেশি ভালবাসতো, খুব বেশি দাবি করতো এবং এই সবকিছুই সে ক্ষয় করে ফেলতো।
সে ভাবলো, কনস্টান্টিনোপলের সেই সময়ের একাকিত্বের কথা। যখন সে প্যারিস থেকে বেরিয়ে আসার আগে ঝগড়া করে এসেছিলো। পুরোটা সময় সে বেশ্যাবাজি করেছে। যখন তা শেষ হয়ে গেছে, সে তার একাকিত্ব ঘোচাতে ব্যর্থ তো হয়েছেই, উল্টো সেই একাকিত্বকে আরো অসহনীয় করে তুলেছে। সেই সময় সে তাকে চিঠি লিখলো। তাকে মানে তার প্রথম প্রেমিকাকে। যে তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। সেই চিঠিতে সে লিখেছিলো, কখনও সে তাদের সেই সম্পর্ক শেষ করে দিতে পারেনি। লিখেছিলো, কীভাবে যখন সে একবার ভেবেছিলো সে তাকে রিজেন্সের বাইরে দেখেছে, যা তাকে একেবারেই দুর্বল করে দিয়েছিলো। তার ভেতরটা যন্ত্রণাদগ্ধ করেছিলো। সে এক নারীকে বলেভার্ডের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত অনুসরণ করেছিলো। যে দেখতে কোনো না কোনোভাবে তার মতো ছিলো। ভয়ে ভয়ে ছিলো, এই বুঝি দেখবে। আরে! এ তো সে নয়! ভয়ে ভয়ে ছিলো, এই বুঝি তাকে দেখতে পাওয়ার সেই সুখের অনুভূতিটা নষ্ট হয়ে যায়। লিখেছিলো, কী করে যাদের সঙ্গেই সে ঘুমাতে গেছে তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার পর মনে হয়েছে সে যেনো তার আরো বেশি অভাববোধ করছে। লিখেছিলো কী করে সে যা করেছিলো তা কোনো ব্যাপারই হয়ে উঠতে পারেনি। যেহেতু সে জানতো তাকে ভালো না বেসে সে থাকতে পারবে না। ক্লাবে বসে শান্ত ঠাণ্ডা মাথায় সে তাকে এই চিঠিটি লিখেছিলো এবং এই অনুরোধ জানিয়ে সে তাকে নিউইয়র্কের ঠিকানায় চিঠিটি পাঠিয়েছিলো। লিখেছিলো, সে যেনো তাকে তার প্যারিসের অফিসের ঠিকানায় চিঠি লেখে। সেটাই তার কাছে নিরাপদ মনে হয়েছিলো। আর সেই রাতে সে তার এতটাই অভাববোধ করেছিলো যে ভেতরটা ভীষণ ফাঁকা ফাঁকা লাগছিলো, ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল, হাঁটতে হাঁটতে সে ম্যাক্সিম পার হয়ে গিয়েছিলো। একজন মেয়েকে জুটিয়ে নিয়েছিলো এবং তাকে নৈশভোজ করাতে নিয়ে গিয়েছিলো। তারপর সে তার সঙ্গে নাচতে এক জায়গায় গিয়েছিলো। মেয়েটি খুব বাজেভাবে নেচেছিলো এবং এক যৌন-উদ্দীপক আমেরিকানের সঙ্গে ঝুলে পড়েছিলো। যে মেয়েটির পেটটাকে তার নিজের শরীরের সঙ্গে এমনভাবে চেপে ধরেছিলো যে তা প্রায় ছারখার হয়ে যাওয়ার জোগাড়।
এরপর বেশ কিছুক্ষণ তুমুল ঝগড়া করার পর সে মেয়েটিকে এক নিম্নপদস্থ ব্রিটিশ গোলন্দাজ সেনার কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছিলো। গোলন্দাজ সেনাটি তাকে সাহস থাকে তো বাইরে যেতে বলেছিলো। তারা বাইরে গিয়ে রাস্তায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে ধামাধাম মারপিট শুরু করে দিয়েছিলো। সে তার চোয়ালের পাশে দুবার প্রচণ্ড আঘাত করেছিলো ভীষণ জোরে। তাতেও যখন সে পড়ে যায়নি, তখন সে বুঝতে পারলো লোকটা মারপিট করার জন্যই এসেছে। গোলন্দাজ সেনাটি তার শরীরে আঘাত করলো, তারপর ধাম করে মারল তার চোখের পাশটায়। সে আবার তার বাঁদিকে ঢলে পড়ল এবং তারপর মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়লো। আর গোলন্দাজ সেনাটিও সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর হামলে পড়লো। সে তার কোট খামচে ধরলো এবং হ্যাঁচকা টানে একটি হাতা ছিঁড়ে ফেললো। সে তখন সেনাটির কানের পেছনে কষে দু’বার থাপ্পড় মারলো। ডানহাত দিয়ে ঘুষি চালিয়েই তাকে দূরে ঠেলে দিলো। প্রথম আঘাতটি লাগার পর গোলন্দাজ সেনাটি মাথা নিচু করতেই সে মেয়েটিকে নিয়ে দিলো এক দৌড়। কারণ এরই মধ্যে তারা মিলিটারি পুলিশ আসার শব্দ শুনতে পেয়েছিলো। তারা একটি ট্যাক্সিতে উঠে পড়েছিলো এবং বসফরাসের রিমিলি হিস্সা পর্যন্ত চলে গিয়েছিলো। চারপাশে ঘুরেছিলো। ঠাণ্ডা রাতে আবার ফিরে এসে বিছানায় গিয়েছিলো। বিছানায় মেয়েটি তার দিকে তাকাতেই তাকে এ ব্যাপারে খুব ঝানু মনে হয়েছিলো। কিন্তু বেশ অগ্নিদগ্ধও লেগেছিলো। গোলাপের পাপড়ির মতো। গাঢ় ফলের রসের মতো টসটসে। বেশ বড়সড় ছিলো তার স্তন। কোমরের নিচে কোনো বালিশ দিতে হয়নি। মেয়েটি ঘুম থেকে জেগে ওঠার আগেই সে তাকে ছেড়ে চলে এসেছিলো। দিনের প্রথম আলোতে বেশ আলুথালু, রুক্ষ লাগছিলো তাকে। একটি চোখ থেঁতলে কালো হয়ে গিয়েছিলো তার। এ অবস্থায়ই সে পেরা প্যালেসে চলে গিয়েছিলো। কোটটি হাতে বয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিলো তাকে। কারণ এর একটি হাতা খোয়া গিয়েছিলো।
সেদিন রাতেই সে আনাতোলিয়ায় রওনা হয়ে গিয়েছিলো। আর তার মনে পড়ে গেলো, সে যাত্রায় সারাদিন ধরে তাদের পপি ক্ষেতের মাঝ দিয়ে যেতে হয়েছিলো। এই পপি থেকেই আফিম তৈরি হয়। কী অদ্ভুত অনুভূতি যে হয়েছিলো তখন! শেষমেশ পুরো পথটাকেই তাদের ভুল মনে হয়েছিলো। যেখানে তাদের নতুন আসা কনস্টান্টাইন অফিসারদের নিয়ে আক্রমণ করতে হয়েছিলো। যারা যুদ্ধের কিচ্ছু জানতো না। সৈন্যদের ওপর গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছিলো আর ব্রিটিশ পর্যক্ষেক একটি বাচ্চার মতোই কেঁদেছিলো।
বেছে বেছে খোশমেজাজে থাকার ঠিক সেই সময়টাতেই কেন তারা ঝগড়া করতো? সে কখনও এসবের কিচ্ছু লেখেনি। কারণ প্রথমত, সে কখনও কাউকে আঘাত দিতে চাইতো না। পরের কারণটি ছিলো- এটা ছাড়াও তো কত্তোকিছু আছে লেখার! কিন্তু সে সব সময়ই ভাবতো, শেষমেশ সে এসব লিখবে। অনেককিছু আছে লেখার। সে বিশ্বটাকে বদলে যেতে দেখেছিল। ঘটনার দিক দিয়েই নয় কেবল। যদিও সে এসব ঘটনার অনেককিছুই দেখেছে। এসব ঘটনার পেছনের মানুষদেরও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছে। কিন্তু সে অতিসূক্ষ্ম পরিবর্তনও দেখেছে। সে বেশ মনে করতে পারে বিভিন্ন সময়ের মানুষেরা কেমন ছিল! সে এর ভেতরেই ছিলো। এসব পর্যবেক্ষণ করেছে এবং এসব নিয়ে লেখা তার কর্তব্য। কিন্তু এখন সে আর লিখবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
এসএমএন
আরও পড়ুন...
** কিলোমাঞ্জারোর তুষার | আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (পর্ব-১)
** কিলোমাঞ্জারোর তুষার | আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (পর্ব-২)
** কিলোমাঞ্জারোর তুষার | আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (পর্ব-৩)