ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শিশুদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে ‌‘জল পড়ে পাতা নড়ে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
শিশুদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে ‌‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা_ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: শিশু মনের বিকাশে শুরু থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যান্য সৃজনশীল কর্মকাণ্ড যেমন- ছবি আঁকা, ছড়া, গল্প, ক্র্যাফট মেকিং ইত্যাদির অবদান অনস্বীকার্য। বাইরের দেশে স্কুলপর্যায় থেকে এসব ব্যাপার অনেক গুরুত্ব সহকারে দেখা হলেও আমাদের দেশের অনেক শিশুরাই এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তবে সৃজনশীল কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত না করা এবং একটি সুস্থ পরিবেশে শিশুর মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে মাসিক শিশুতোষ পত্রিকা 'জল পড়ে পাতা নড়ে'।

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল পাবলিকেশন্স লিমিটেড থেকে প্রকাশিত শিশুতোষ এ পত্রিকাটি শিশুদের মেধা ও মনন বিকাশের ক্ষেত্র প্রস্তুতে সদাব্যাপৃত। একইসঙ্গে শিশু মনের পারস্পরিক আদান-প্রদান ও ভাববিনিময়ের সহজতম উপায় হিসেবে এ পত্রিকাটি প্রকাশ করে আসছে ক্ষুদে লেখকদের ছোটগল্প, কবিতা, ভ্রমণকাহিনী, চিত্রকলা ও সংবাদ।

'জল পড়ে পাতা নড়ে' বাংলাদেশের একমাত্র শিশুতোষ মাসিক পত্রিকা যা ব্রেইলেও প্রকাশ করা হয়। নিয়মিত পত্রিকার পাশাপাশি প্রতি মাসেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ব্রেইল সংখ্যা বের করা হয় এবং সেগুলো বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। প্রতিমাসে ২০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২২০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের কাছে পৌঁছে যায় ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’র ব্রেইল সংখ্যা।

শুধু ব্রেইল সংখ্যা নয়, একই সঙ্গে বিভিন্ন সুবিধা বঞ্চিত স্কুলেও নিয়মিত বিতরণ হয় শিশুতোষ এ পত্রিকাটির ফ্রি কপি। একই সঙ্গে ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু করে প্রথম থেকেই ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ পত্রিকাটি সর্বস্তরের শিশুদের মনন বিকাশ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ উদ্দেশে সারা বছরজুড়ে আর্ট কন্টেস্ট, ক্র্যাফট ওয়ার্কশপ এর মতো বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে এ প্রতিষ্ঠানটি।

সে আয়োজনের অংশ হিসেবেই এ বছর ছবি আঁকার মাধ্যমে শিশুর সৃজনশীল দিকটি তুলে ধরার জন্য ‘ইচ্ছেডানা’ শিরোনামে বছরব্যাপী স্কুল প্রোগ্রাম শুরু করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের এ সহযোগী প্রতিষ্ঠান। শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ে আবদ্ধ না থেকে শিশুরা যেন চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে, রং-তুলির আঁচড়ে খুঁজে নিতে পারে নিজের ইচ্ছের পৃথিবী; সে উদ্দেশেই জল পড়ে পাতা নড়ের এ আয়োজন বলে জানান পত্রিকার সহকারী সম্পাদক আহসান হাবীব।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, শিশুরাই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ এবং তাদের সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদেরই। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি শিশুদের অংশগ্রহণ শুধু তাদের ইচ্ছা এবং স্বপ্ন জানতে চাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাস্তবে রূপ দেওয়া। এর ফলে শিশুরা আনন্দের সঙ্গে ছবি আঁকা, রং করা, গল্প, ছড়া-কবিতা, চারু ও কারুশিল্পে দক্ষতা অর্জন এবং সেই সঙ্গে তাদের মানসিক বিকাশের মাধ্যমে মানবিক হয়ে গড়ে ওঠে।

‘ইচ্ছেডানা’র আয়োজনে শিশুদের আঁকা ছবিগুলো নিয়মিত ছাপা হচ্ছে জল পড়ে পাতা নড়ে পত্রিকায়। একই সঙ্গে বিজয়ী শিশুদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে বিশেষ পুরস্কার। ইতোমধ্যে ঢাকার স্বনামধন্য বেশ কয়েকটি স্কুলে ইচ্ছে ডানার আয়োজন করা হয়েছে এবং তা আগামীতেও বজায় রাখার আশা ব্যক্ত করেন আহসান হাবীব।

শুরু থেকেই পত্রিকাটির সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে আছেন প্রখ্যাত শিল্পী রফিকুননবী। তার মতেও, শিশু মনের বিকাশে সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের অবদান অনস্বীকার্য। তাই শিশু মনের পারস্পরিক আদান-প্রদান ও ভাববিনিময়ের সহজ মাধ্যম হিসেবে জল পড়ে পাতা নড়ে কাজ করে যেতে চায় বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৮
এইচএমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।