বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ঢাকা আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবে ‘ভাঙা বাংলা: ত্রস্ত নিলীমায়’ শীর্ষক সেশনে এমনটাই বললেন ভারতীয় ঔপন্যাসিক স্বপ্নময় চক্রবর্তী। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হলেও তার পূর্বপুরুষ ছিলেন নোয়াখালীর মানুষ।
এই সেশনে আরও অংশ নেন বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ, গল্পকার, কবি ও গবেষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লেখক ও শিক্ষক শামীম রেজা।
অনুষ্ঠানে নিজের লেখক হওয়া ও দেশভাগ নিয়ে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমি সৈয়দ মুজতবা আলীর কাছ থেকে প্রভাবিত হয়ে লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আমি আমার মা ও বাবার কাছ থেকেই দেশভাগের কথা জানতে পারি। তাদের চোখের মধ্যে দেখি দেশান্তরের বেদনা। দেশভাগের মতো কঠিন সময়ের প্রেক্ষাপট পাওয়া যায় সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা ‘প্রেম ও প্রার্থনার গল্প’ বইটিতে।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির এই উপমহাদেশে ব্যবসার ঘটনা ও তাদের শাসন নিয়ে এই গল্প। উত্তর-ঔপনিবেশিক নিয়ে পড়াশোনার সময় আমার এই বিষয়ে আগ্রহ জন্মায়। সময়টা পুরনো হলেও এই গল্পের প্রেক্ষাপট কিন্তু বাংলাদেশ। আমি মূলত দুটো সময় এক করার চেষ্টা করেছি।
১৯৯২ সালে স্বপ্নময় চক্রবর্তী ‘চতুষ্পাঠী’ নামে একটি উপন্যাস লেখেন। এই উপন্যাসে স্বপ্নময় চক্রবর্তী দেখিয়েছেন, অচল পয়সার মতো ইংরেজি না জানা, আচার্যদেব ও তার পৌত্র, পিতৃহীন বিলুর চোখ দিয়ে ক্যালাইডোস্কোপের মতো উদ্ভাসিত ষাটের দশক। উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট দেশভাগ পরবর্তী মানুষদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা।
‘চতুষ্পাঠী’ সম্পর্কে এই লেখক বলেন, চতুষ্পাঠীর প্রেক্ষাপট দেশভাগ। পুরো ব্যাপারটা আমার স্মৃতি, আমার নির্মাণ। আবার ঠিক দেশভাগের ওপরও না, কিন্তু দেশভাগের বেদনা প্রকাশ পেয়েছে এই উপন্যাসটিতে।
স্বপ্নময় চক্রবর্তী বর্তমানে তার নতুন উপন্যাস নিয়ে কাজ করছেন। এই উপন্যাসে ’৪৭’র দেশভাগ নিয়ে কথা না বলা হলেও ’৭১’র ভয়াবহতা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। এক বিহারি মেয়ের গল্পের মধ্য দিয়ে তা উপস্থাপিত হয়েছে। নতুন এই উপন্যাসের নাম ‘জলের ওপর পানি’।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৯
এইচএমএস/এএটি