ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ভালো করছে তরুণ লেখকরা, পাঠকের প্রত্যাশা আরও বেশি 

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
ভালো করছে তরুণ লেখকরা, পাঠকের প্রত্যাশা আরও বেশি 

বইমেলা থেকে: প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় সাড়া ফেলেছে অনেক তরুণ লেখকের বই। বর্তমানে প্রবীণ ও জনপ্রিয় লেখকদের অনেকেই নিয়মিতভাবে না লেখার কারণে তাদের বইয়ের প্রকাশও কম। এদিক থেকেও এগিয়ে তরুণ লেখকরা। শুধু গল্প, কবিতা বা উপন্যাস নয়, ভ্রমণ, খেলাধুলা, বিজ্ঞান, আত্মোন্নয়ন, অনুবাদ সাহিত্যসহ বিভিন্ন বিচিত্র বিষয়ে লিখে চলেছেন তারা। আর তাতে করে পাঠকদেরও ব্যাপক সাড়া মিলছে। 

বয়সে তরুণ হওয়ায় এখন পর্যন্ত সেভাবে নির্দিষ্ট পাঠক শ্রেণী না থাকায় তরুণ লেখকদের বইয়ের কাটতির প্রশ্নে অনেক ক্ষেত্রেই লেখার মানের চেয়ে পরিচিতিটাই বেশি কাজে দেয়। অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত বা অপরিচিত লেখকদের বই গুরুত্বপূর্ণ হলেও পাঠকদের সেভাবে টানে না।

মূলত যারা লেখক হিসেবে বই প্রকাশের আগে বিভিন্ন পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে বা ব্লগে লেখালেখি করে নানাভাবে কিছুটা পরিচিতি পেয়েছেন তাদের বইয়েই বেশি আগ্রহী পাঠকরা। সব মিলিয়ে একেবারেই নতুন লেখকরা এখনও তেমন একটা পরিচিতি পাচ্ছেন না পাঠকদের কাছে। তবুও মেলায় প্রতিদিনই প্রকাশ পাচ্ছে তরুণ লেখকদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বই।  

মেলায় কথা হয় তরুণ লেখক মোজাফফর হোসেনের সঙ্গে। বাংলানিউজকে এ লেখক বলেন, বাণিজ্যিক ও লেখার মান দুই জায়গাতেই মূলধারায় চলে এসেছে তরুণ লেখকরা। এমনকি সিরিয়াস সাহিত্য চর্চা থেকে গবেষণা সব জায়গাতেই তরুণদের অবস্থান এখন সুদৃঢ়। তাদের বইও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর।

আরেক তরুণ লেখক স্বকৃত নোমান বলেন, প্রবীণ লেখকদের অনেকেই এখন নিয়মিত নন। গত কয়েক বছরে সেই জায়গাটি পূরণ করছেন তরুণ লেখকরা। তারা শুধু উপন্যাস নয়, গল্প, কবিতা, গবেষণাধর্মী গ্রন্থ, অনুবাদ- সব জায়গায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পাঠকরাও ভালোবেসে তাদের গ্রহণ করছেন।

তরুণ লেখক পিয়াস মজিদও একই ধরনের কথা বলেন। তিনি বলেন, আক্ষরিক অর্থেই তরুণদের জয়জয়কার চারদিকে। তারা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, অনুবাদ- সব জায়গায় ভালো করছেন। তরুণ লেখক হিসেবে অনেকে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিতও হয়েছেন। নিয়মিত চর্চা থাকলে তাদের একটি বড় জায়গায় পৌঁছাতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

এদিকে তরুণ লেখকদের ব্যাপারে পাঠকদের চাহিদা আরও একটু বেশি। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তা শারীফ অনির্বান বলেন, নতুনদের মধ্যে কিছু কিছু লেখক আছেন যারা ভালো লিখছেন। তবে অধিকাংশই মূলধারার সাহিত্য থেকে দূরে থাকেন। নতুন লেখকদের কাছ থেকে আমার প্রত্যাশা হবে, তারা আরও মানসম্পন্ন লেখা উপহার দেবেন এবং সাহিত্যের মূলধারার ভেতরে থেকে নিজের মতো লেখার চেষ্টা করবেন।

এবারের বইমেলায় তরুণ সাহিত্যিকদের প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য কিছু বইয়ের মধ্যে আছে- পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স থেকে ফারুক আহমেদের গল্পগ্রন্থ ‘শহরে দেবশিশু’, স্বকৃত নোমানের গল্পগ্রন্থ ‘বানিয়াশান্তার মেয়ে’, মোজাফফর হোসেনের উপন্যাস ‘তিমিরযাত্রা’, দেশ পাবলিকেশন্স থেকে জয়দীপ দে’র উপন্যাস ‘কাসিদ’, চন্দ্রবিন্দু থেকে মাহবুব ময়ূখ রিশাদের ‘আরিমাতানো’, রাসেল রায়হানের উপন্যাস ‘অমরাবতি’, হামিম কামালের উপন্যাস ‘জাদুকরী ভ্রম’, পাঠক সমাবেশ থেকে পিয়াস মজিদের কবিতার বই ‘দুপুরের মতো দীর্ঘ কবিতা’, অন্যপ্রকাশ থেকে সাদাত হোসাইনের দুই উপন্যাস ‘মেঘেদের দিন’ ও ‘মরণোত্তম’, প্রথমা প্রকাশ থেকে আলতাফ শাহনেওয়াজ কবিতার বই ‘সামান্য দেখার অন্ধকারে’, অন্যপ্রকাশ থেকে নওশাদ জামিলের কবিতার বই ‘প্রার্থনার মতো একা’, হক ফারুক আহমেদের কবিতার বই ‘মেঘদরিয়ার মাঝি’, বর্ষাদুপুর থেকে শরাফত আলীর কবিতার বই ‘কবিতা ২৫’ ইত্যাদি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।