ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্যাংকিং

সরকারি বন্ডের বাজার উন্নয়নের সমীক্ষায় আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বৈঠক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২৩
সরকারি বন্ডের বাজার উন্নয়নের সমীক্ষায় আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বৈঠক

ঢাকা: সরকারি বন্ডের বাজার উন্নয়নে সমীক্ষা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফ কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সফররত আইএমএফের প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

মেজবাউল হক বলেন, বন্ড মার্কেট স্টাডি পারপাসে এসেছেন তারা। আলোচনার বিষয়বস্তু হলো টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট অন বন্ড মার্কেট। লোকাল কারেন্সি বন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে স্টাডি করছেন তারা।

আইএমএফের ৭ সদস্যর প্রতিনিধিদলে বন্ড বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের দুজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি বন্ডের সেকেন্ডারি মার্কেটে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, তা নিয়েই আইএমএফের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছে। সরকারি বন্ড মার্কেট উন্নত হলে বাংলাদেশের বেসরকারি বন্ড মার্কেটও উন্নত হবে।

তিনি বলেন, এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বৈঠক করছে আইএমএফের এবারের প্রতিনিধিদল।

বুধবার থেকে শুরু হওয়া আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বৈঠক চলবে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত। মূল উদ্দেশ্য বন্ড মার্কেট হলেও এসব বৈঠকের সূচিতে মুদ্রানীতির বাস্তব কার্যকারিতা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কৌশলে যে পরিবর্তন আনা হচ্ছে তার ফ্রেমওয়ার্ক, ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এর ব্যবস্থাপনা, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়ের মতো বিষয় রাখা হয়েছে।

বিনিময় হার বাজারমুখী করা ও মুদ্রানীতির বাস্তবায়ন ইস্যুতে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মেজবাউল হক বলেন, এসব বিষয় নিয়ে এবার কোনো আলোচনা হয়নি। তারা টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট করতে এসেছে বন্ড মার্কেট নিয়ে।

ঋণচুক্তির শর্ত অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব আইএমএফের মান অনুযায়ী ‘বিপিএম৬’ পদ্ধতিতে চলতি জুলাই মাস থেকে সংরক্ষণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তা প্রকাশ করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

এবারের সফরে বিপিএম৬ পদ্ধতি মানা হচ্ছে কি না, তা দেখবে আইএমএফ প্রতিনিধিদল। ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড় হবে আগামী অক্টোবর মাসে। এর আগেই ছাড়কৃত অর্থের ব্যবহার ও আর্থিক খাতের সংস্কারে নেওয়া উদ্যোগগুলো দেখতে এসেছে প্রতিনিধিদল।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফ মনে করছে বন্ড মার্কেটে উন্নয়ন হলে ব্যাংকের বিকল্প অর্থায়নের সুযোগ হবে উদ্যোক্তাদের। এতে ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের চাপ কমে গিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমে আসবে। দেশে বন্ড মার্কেট ততটা শক্তিশালী না হওয়ায় উদ্যোক্তারা এখনও ব্যাংকমুখী হয়ে রয়েছেন।  

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, জাপান, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ-আফ্রিকা, চীন, থাইল্যান্ড, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামসহ অনেক দেশের চেয়ে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় বাংলাদেশের বন্ড মার্কেটের অনুপাত অনেক নিচে।

জাপানে এ হার জিডিপির ২৪১ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ১৬৯ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের ১১৫ শতাংশ, ভারতে ৪৯ শতাংশ। বাংলাদেশে এটি ৮ শতাংশ। এই ৮ শতাংশের মধ্যে ৭ দশমিক ৯ শতাংশই সরকারি পর্যায়ের। বেসরকারি খাতে বন্ডের অবদান মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা: জুলাই ৬, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।