ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ব্যাংকিং

এবার অস্বস্তিতে বিকাশ!

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৪
এবার অস্বস্তিতে বিকাশ!

ঢাকা: প্রাইম ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং-ইজি ক্যাশের লাইসেন্স বাতিলের পর এবার লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বিকাশের। লাইসেন্স বাতিলের শঙ্কায় এবার অস্বস্তিতে পড়েছে ব্র্যাকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ।

বিকাশ নিয়ে অস্বস্তিতে আছে বাংলাদেশ ব্যাংকও।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিকাশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ অস্বস্তির আভাস মিলেছে।

বেসরকারি প্রাইম ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ইজি ক্যাশের লাইসেন্স বাতিলের পর বিকাশের ভাগ্য নির্ধারণ করা হতে পারে।

সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক বিকাশকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার দেওয়ার লাইসেন্স বাতিল করে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের জন্য লাইসেন্স দিতে পারে। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খুব শিগগিরই এর সুরাহা হতে পারে। তবে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের জন্য আবেদন করতে হবে ব্র্যাক কর্তৃপক্ষকে।

সূত্র বলছে, বিকাশের অভ্যন্তরে বর্তমানে ব্যাপক অস্বস্তি চলছে। এমন কি কর্মকর্তারাও ব্যাপক উদ্বিগ্ন।

জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিকাশের ভাগ্য নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি উচ্চপর্যায়ের সভা ডেকেও পরে অপ্রকাশিত কারণে তা স্থগিত করা হয়। কেন করা হয় তা কারো কাছেই স্পষ্ট ছিলো না। আজও তা প্রকাশ হয়নি।

জানতে চাইলে তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার বাংলানিউজকে ওই সময় তার দফতরে বলেছিলেন, ব্যস্ততার কারণে বিকাশের বিষয়ে ডাকা বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেছিলেন, বিকাশ সাবসিডিয়ারি থাকবে নাকি ব্র্যাক ব্যাংকের সেবা হিসেবে থাকবে সে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকটি ডাকা হয়েছিলো। আমরা সবাইকে এক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে চাই। যাতে ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়। এবং একটি সম প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রেও তৈরি হয়।

বিকাশের বৈধতার প্রশ্ন তুলে ২০১২ সালের জুন মাসে বাংলানিউজ ধারবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ৬টি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ওই সময়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক বিকাশের পক্ষে বিজ্ঞপ্তি দিলে বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়। তার আগে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ব্যাংকের পক্ষে এভাবে অবস্থান নিয়ে বিতর্কে জড়ায়নি।

সূত্র মতে, ২০১০ সাল বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটিকে পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটর (পিএসও) হিসেবে অনুমোদন দেয়। ব্র্যাক ব্যাংক ২০০৯ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে পিএসও হিসেবে কাজ করার জন্য সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের আবেদন করে। ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংককে পিএসও হিসেবে কাজের অনাপত্তি দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল একই বিভাগ থেকে ব্র্যাক ব্যাংককে বিকাশের জন্য পিএসও লাইসেন্স দেওয়া হয়। অথচ ব্র্যাক ব্যাংক ও বিকাশ দুটো আলাদা প্রতিষ্ঠান। তাদের পরিচালনা পর্ষদও আলাদা।

পিএসও’র নীতিমালায় আছে, যেসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ জমা করে, সেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ লাইসেন্স পেতে পারে। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান না হয়েও লাইসেন্স পেয়েছে বিকাশ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিকাশ নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে আছি। দেখা যাক, ইজি ক্যাশের পর বিকাশের ভাগ্যে কি আছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবাকে বৈধতা দেয়। এর আওতায় বেসরকারি ব্যাংক এশিয়া ও এনআরবি কমার্সিয়াল ব্যাংক লিমিটেড প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং এর লাইসেন্স পেয়েছে।

এদিকে, ইজি ক্যাশের লাইসেন্স বাতিলের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর বিকাশের গ্রাহকরা অনেকেই ভয় থেকে বিকাশের হিসাবে জমা থাকা টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।