ঢাকা: প্রসারিত ব্যাংকিংখাতের অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের ঘটনায় জনমনে আস্থাহীনতা ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। অর্থনীতির কল্যাণে এ সব অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ করে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে ব্যাংকিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উদ্যোগে ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ দাবি জানানো হয়।
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিনএক্সেল’র চেয়ারম্যান ও অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমদ। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম বাধা। অতীতে পুঁজিবাজার, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, বেসিক ব্যাংক ও ডেসটিনি কেলেঙ্কারি সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮শ ১০ কোটি টাকা চুরির ঘটনা। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য ব্যাংকিং কমিশন গঠনসহ উত্তরণে বেশ কিছু সুপারিশ করেন।
সুপারিশগুলো হলো- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংস্কার ও স্বায়ত্ত্বশাসন নিশ্চিত করা; বেসরকারি ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা; ব্যাংকিং খাতের জালিয়াতি বন্ধ করা; আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য অভ্যন্তরীণ অডিট করা; পরিচালক নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠন; ব্যাংকিং খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা; অতীতের বিভিন্ন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনগুলো বাস্তবায়ন করা; ট্রেড ইউনিয়নের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা; সৎ-নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা; খেলাপি ঋণ রোধে ট্রাইব্যুনাল গঠন; যথাযথ প্রক্রিয়ায় ঋণ অনুমোদন করা; আর্থিক বিধি-বিধানগুলো অনুসরণ করা; ১৩. মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিরাপদ করা; টাকা পাচার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া; ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখা; সচেতনতা বাড়ানো।
সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ঢাবি অধ্যাপক আবু আহমেদ, সুজন নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার ও ডা জাফর উল্লাহ চৌধুরী, ড. সাজ্জাদ জহির, নুরুল হক মজুমদার, আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল: ২১, ২০১৬
এসই/এএ