ঢাকা: শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ‘বিশেষ আদায় অভিযানে’ নেমেছে রূপালী ব্যাংক। এ কার্যক্রমের আওতায় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন।
২০১৪ সালে রূপালী ব্যাংক শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে ১০৩ কোটি টাকা আদায় করেছে। ২০১৫ সালে আদায় হয়েছিল ১১২ কোটি টাকা। তবে ২০১৬ সালে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ে অর্থমন্ত্রণালয় ১৫০ কোটি টাকা টার্গেট বেঁধে দেয়। ওই টার্গেটের মধ্যে পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে পর্যন্ত) আদায় হয়েছে ১৪৫ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার ৯৬ শতাংশ অর্জিত হয়। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিনের দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও কঠোর মনিটরিংয়ের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
শ্রেণিকৃত, অবলোপনকৃত এবং অশ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের জন্য বিশেষ আদায় অভিযান পরিচালনা করছে ব্যাংকটি। এ কার্যক্রমের আওতায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দু’জন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান কার্যালয় ও বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক মাঠে কাজ করেছেন। সংশ্লিষ্টরা ব্যাংকের গ্রাহকদের সঙ্গে ডোর টু ডোর বৈঠক করে ঋণ আদায় করছেন। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঋণ গ্রহীতাদের একান্ত স্বাক্ষাতকার ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়া যুগিয়েছে বলে রূপালী ব্যাংকের গ্রাহকরা জানান।
ব্যাংকের রিকভারি বিভাগের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে রূপালী ব্যাংক ৫০ দিনের মধ্যে ৪শ’ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে নগদ আদায় হবে ১৭০ কোটি টাকা। অবলোপনকৃত ঋণ থেকে নগদ ৩০ কোটি টাকা এবং অ-শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে নগত ২০০ কোটি টাকা আদায় করা হবে।
মো. আবুল কাসেম নামে রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের এক গ্রাহক বলেন, ‘রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ে যে কৌশল নিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তিনি বলেন, ঋণ আদায়ের এ কৌশল অন্য কোন ব্যাংকে নেই। রূপালী ব্যাংক ঋণ আদায়ে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করায় এ ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ও বেশি হচ্ছে। আর আমরা ব্যাংকের টাকাও দিকে বাধ্য হচ্ছি। ’
এ বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপী ঋণের আশংঙ্কাজনক বৃদ্ধি ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডকে দারুনভাবে ব্যহত করছে। শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ যতই বাড়ছে, মুনাফা অর্জনের পথ ততই সংকুচিত হচ্ছে। ব্যাংকের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে খেলাপী ঋণ আদায়ের কোন বিকল্প নেই। তাই ব্যাংকের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায় কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রূপালী ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের জন্য ‘বিশেষ আদায় অভিযান’ পরিচালিত হচ্ছে। এর আওতায় ব্যাংকের দু’জন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান কার্যালয় ও বিভাগীয় কার্যালয়ের সকল মহাব্যবস্থাপক ৪শ’ কোটি টাকা ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। আদায়ের লক্ষমাত্রা অর্জিত হলে রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের খেলাপী ঋণের পরিমান খুব দ্রুত হ্রাস পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৬
এসই/জেডএম/