ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

গ্রামে ইলেকট্রিক মানি অর্ডারে আড়াই লাখ ‍এজেন্ট

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৬
গ্রামে ইলেকট্রিক মানি অর্ডারে আড়াই লাখ ‍এজেন্ট

ঢাকা: যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আধুনিকায়ন হতে যাচ্ছে দেশের সকল ডাকঘরের কার্যক্রম।

উপজেলা পর্যায়ে মানি অর্ডার সার্ভিস চালু করা হলেও সেরকম ভাবে এখনো এর কার্যক্রম চালু হয়নি।

বর্তমানে এই মাধ্যমে টাকা পাঠানো অনেক ব্যয়বহল ও সময় সাপেক্ষ। এছাড়া নাম মাত্র খরচে টাকা পাঠানোর দ্রুততম ব্যবস্থা রয়েছে।

গ্রামে টাকা পাঠানোর বিষয়টি আরো সহজ করতে গ্রাম পর্যায়ে ইলেকট্রিক মানি অর্ডার সার্ভিস পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আড়াই লাখ এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। যাতে করে ২৪ ঘণ্টা এই সার্ভিস চালু থাকে। ইতোমধেই লাখের ওপরে এজেন্ট নিবন্ধন হয়ে গেছে বলে জানায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, এই পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে মুহূর্তেই টাকা পাঠানো সম্ভব। এছাড়া পোস্ট অফিস থেকে প্রাপক টাকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রেরকের কাছে একটি নিশ্চিতকরণ এসএমএস চলে যাবে। এক হাজার টাকায় সার্ভিস ফি ১৮ টাদা ৫০ পয়সা। ৫০০ টাকার কমে টাকা পাঠানো যাবে না। তবে চার হাজার টাকা পাঠালে খরচ লাগবে মাত্র ৫৭ টাকা।

এই সেবার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পাঠানো যাবে। সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রনিক মানি অর্ডারের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাবে। পোস্ট অফিসে এই পদ্ধতিটি ছিল পেপার ভিত্তিক। এখন এটাকে ইলেকট্রিক ভিত্তিকে রূপ দেওয়া হবে। পেপার ভিত্তিতে সময় লাগতো ৭ থেকে ৮ দিন এখন সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যাবে।

বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পোস্ট অফিস হাঁফিয়ে উঠে লোকসান গুনছে।   তখন যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই ই-পোস্ট অফিসে (ডিজিটাল) রূপান্তরিত করা হচ্ছে। এজন্য পোস্ট অফিসের সার্বিক কার্যক্রম ই-সেবায় এনে নতুন কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে।

পোস্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক নামে টাকা জমানোর যে খাত চালু আছে তারও পরিবর্তন হবে। শহর থেকে মাঠ পর্যায়ের সকল মানুষকে এ ব্যাংকিং সার্ভিসের আওতায় আনার লক্ষ্যে পোস্টাল ক্যাশ কার্ড সার্ভিস চালু হবে।

সব ধরনের চিঠি দ্রুত পৌঁছানোর ব্যবস্থার সঙ্গে দেশজুড়ে ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার সার্ভিস চালু করা হবে। যাতে প্রেরিত টাকা প্রাপক দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাতে পান। ২ হাজার ১০ সালে এই সার্ভিস পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১০৪টি পোস্ট অফিসে চালু করা হয়। এর সফলতায় বর্তমানে দেশের সকল শহর গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ই-মানি অর্ডার চালু করা হবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্র জানায়, ‘পোস্ট-ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি’ প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হবে। ২০১৫ সালে ২ হাজার ৫০০টি ডাকঘরে পোস্ট-ই-সেন্টার স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছিল। বর্তমানে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫০৬টি। এই সংখ্যা সাড়ে ৮ হাজারে রূপান্তর করার পরিকল্পনা আছে। পোস্ট-ই-সেন্টারের মতোই সারা দেশে নতুন করে  ছড়িয়ে যাবে ইলেকট্রিক মানি অর্ডার সার্ভিস।

ই-সেন্টারের জন্য ল্যাপটপ ও এর এক্সসরিজ, অন্যান্য সরঞ্জামাদি যেমন, মেশিন, ফিঙ্গার ভেন মেশিন, ফটো প্রিন্টার ও সোলার সিস্টেমের ব্যবস্থা থাকবে।

ইলেকট্রিক মানি অর্ডার সার্ভিস প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) এস এস ভদ্র বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গ্রামে গ্রামে নিয়ে যাবো ইলেকট্রিক মানি অর্ডার সার্ভিস। সেই লক্ষ্যে নতুন করে দেশব্যাপী আড়াই লাখ এজেন্ট নিয়োগ দিবো। ইতিমধ্যেই লাখের উপরে এজেন্টের নিবন্ধন সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আমাদের পোস্ট চলার সময় গ্রামের মানুষ স্বল্প খরচে দ্রুত টাকা উত্তোলন করতে পারবে। এর পরে অন্য সময়ও যাতে এই সার্ভিস পেতে পারে সেই লক্ষ্যে এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে। ২০১৭ সালের জুনের মধেই এই ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, পোস্ট অফিসকে আর সনাতন রাখবো না। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরো আধুনিক‍ায়ন করবো। টাকা উত্তোলনের জন্য আমরা ১৩টা এটিএম বুথ চালু করেছি। সারা দেশে এটিএম বুথ ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৬
এমআইএস/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।