বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে শুরু হওয়া ব্যাংকের দুইদিন ব্যাপী ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আরাস্তু খান।
তিনি বলেন, দেশের এক কোটি ২০ লাখ গ্রাহক এই ব্যাংকের প্রতি আস্থা রেখেছে।
তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠান করলে নিজেদের লোকদের চাকরি দেবে এটা স্বাভাবিক। এখন যারা আছে তাদের কারও চাকরি যাবে না। তবে নতুন চাকরির ক্ষেত্রে এখানে সবার জন্য দরজা খোলা। মেধার ভিত্তিতে যে কোনো ধর্মের মানুষ এই ব্যাংকে চাকরি পাবেন। এছাড়াও ব্যাংকে নারী কর্মী কম, সেটা বাড়ানো হবে। অন্য ধর্মের কেউ যদি শরীয়াহর নীতি মেনে চাকরি করতে পারে তাতে সমস্যা কোথায়। এই ব্যাংক সর্ম্পকে অর্থমন্ত্রী ও গভর্নর সবাই ভালো বলছে।
সবার প্রচেষ্টায় এটা সফল হয়েছে। আগে যে পর্ষদ ছিল তারা খারাপ না। তবে যে কোনো প্রতিষ্ঠানে মাঝে মধ্যে পরিবর্তন আসে। এটা সেরকম একটা ঘটনা।
শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সাল শেষে ব্যাংকটির আমানত ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়ে ৬৭ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা হয়েছে। এর মধ্যে বিনা খরচের আমানত রয়েছে ৬ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা। গত বছর ৮ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগসহ মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা এবং গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ।
২০১৬ সালে ব্যাংকটির মাধ্যমে ৩৪ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ২৫ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়েছে। পাশাপাশি এসেছে ২৮ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স। চলতি বছর ব্যাংকের আমানতের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েচে ৮৫ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার আমদানি ও ২৪ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া রেমিট্যান্স লক্ষ্যমাত্রা ১৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৩২ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পরিচালনার সঙ্গে ইসলামী ব্যাংক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ ব্যাংক আগামীতে জিডিপিতে ১ শতাংশ অবদান রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণের পাশাপাশি ক্ষুদ্র আমানত বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। এখান থেকে একজনকেও চাকরিচ্যুত করা হবে না। নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ দিচ্ছে এমন কথা সঠিক না।
নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল মতিন বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে অনেক গুঞ্জন রয়েছে। তাতে কান না দিয়ে বর্তমানের মতো সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। মেধা যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পদোন্নতি দেওয়া হবে। তার কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তিনি পদত্যাগ করে চলে যাবেন। এছাড়া কে কোন রাজনীতি থেকে চাকরিতে এসেছেন সেটা এই পর্ষদের বিষয় না। সততা,দক্ষতা ও যোগ্যতা এখানকার প্রধান মাপকাঠি।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অডিট কমিটির চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল মাবুদ পিপিএম, পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, সামীম মোহাম্মদ আফজাল, বোরহান উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল আলম, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. জয়নাল আবেদীন, মো. মিজানুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল করিম বক্তব্য রাখেন।
ব্যাংকের এমডি মো. আবদুল হামিদ মিঞার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএমডি মো. মাহবুব-উল-আলম। অনুষ্ঠানে শাখা ব্যবস্থাপকরা ছাড়াও ব্যাংকের ডিএমডি, প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও আঞ্চলিক প্রধানরা অংশ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
এসই/আরআই