ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

রুপালি ইন্স্যুরেন্সের অবৈধ ব্যয় ১০ কোটি টাকা

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৭
রুপালি ইন্স্যুরেন্সের অবৈধ ব্যয় ১০ কোটি টাকা

ঢাকা: ব্যবস্থাপনার নামে ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় দেখিয়েছে বেসকারি খাতের বিমা কোম্পানি রুপালি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে তথ্য রয়েছে, যে কোম্পানিটি ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় হয়েছে ৮৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

অথচ নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা ব্যয় করতে পারবে ৭৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে গত সাত বছরের ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় করেছে কোম্পানিটি।

যা বিমা আইন-২০১০’র ৬৩ ধারা ও বিমা বিধিমালা-১৯৫৮ এর লঙ্ঘন।

অবৈধ ব্যয়ের মধ্যে ২০০৯ সালে ৪৩ লাখ টাকা, ২০১০ সালে ৪৮ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ৬১ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে ২ কোটি ৫২লাখ টাকা এবং ২০১৫ সালে ৪১ লাখ টাকার বেশি ব্যয় দেখিয়েছে।

অবৈধ ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের পাশাপাশি কোম্পানিটি সর্বশেষ তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে বিশেষ অডিট ফার্ম (বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান) মেসার্স নুরুল ফারুক হাসান অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ।

সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রুপালির ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের বিনিয়োগ, ঋণ, অগ্রিম, স্থায়ী সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদ, গাড়ি, জমি ও বিল্ডিং, নগদ টাকা, ট্যাক্স ও ভ্যাট, চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা কী পরিমাণ সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন তার পর্যালোচনাসহ কোম্পানির এ তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।

বিমা আইন ২০১০’র ২৯ ধারার ক্ষমতা বলে কোম্পানিগুলোতে এ নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২ মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি নিরীক্ষক নিয়োগের বিষয়টি চিঠি দিয়ে কোম্পানিগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে আইডিআরএ।

বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিমা আইনের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে- আইনের অন্য কোনো বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিমা ব্যবসা পরিচালনাকারী যে কোনো বা সব বিমা কোম্পানির বিমা সংক্রান্ত সব লেনদেন, রেকর্ডপত্র, দলিল দস্তাবেজ, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এক বা একাধিক নিরীক্ষক দিয়ে নিরীক্ষা করাতে পারবে।

ধারায় আরও বলা হয়েছে, এ ধারার অধীনে নিযুক্ত নিরীক্ষক বিমাকারীর বিমা ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ডপত্র, হিসাব বই, রেজিস্টার, ভাউচার, পত্র এবং অন্য সব দলিল পরিদর্শন করতে পারবে এবং এ উদ্দেশে বিমাকারীর যে কোনো পরিচালক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বক্তব্য শুনতে এবং বিমাকারীর কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র ও তথ্য তলব করতে পারবে।

এ ধারা অনুসারে, নিরীক্ষা কাজের জন্য নিয়োগ পাওয়া নিরীক্ষক সর্বোচ্চ ৪ মাসের মধ্যে একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে। প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনের ৪টি কপি আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে হবে।

আইডিআরএ সদস্য জুবের আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, বিমা কোম্পানিটিতে নিরীক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে রয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে কল রিসিভ করেননি তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৭
এমএফআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।