এ ক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার জন্য বিশেষায়িত শর্তাবলীও নির্ধারণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কম সুদে বাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুনঃ অর্থায়নের জন্য ফান্ড গঠন করলে দ্রুত এ খাতে সফলতা আসবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘এক্সপ্লোরিং বেরির্য়াস অব সাসটেইনেবল ফিন্যান্স ইন ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর অ্যান্ড পলিসি প্রোপজিশনস টু রিমুভ দ্য বেরিয়ার’ শীর্ষক গবেষণা কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিআইবিএম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগ যৌথভাবে এ কর্মশালা আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক, প্রশিক্ষণ ড. শাহ্ মোঃ আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি গবেষক দল কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
বিআইবিএম মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মনোজ কুমার বিশ্বাস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালে গ্রিন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে টেকসই অর্থায়ন শুরু হয়। টেকসই অর্থায়নের দ্রুত সফলতার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত এ খাতে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে, যা দূর করতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটা তহবিল গঠন করতে হবে। তবে এটা ব্যাংকের উপর চাপিয়ে দিলে ব্যাংক তা করবে না। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটা কোর ফান্ড গঠন করতে পারে। যেখানে সরকারের বাজেট থেকে কোর ফান্ডে টাকা জমা হবে। এই ফান্ডে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো টাকা জমা করবে।
তিনি বলেন, শস্য বিমার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে তা বাস্তবায়ন সহজসাধ্য নয়। কারণ এতে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাবে।
বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং খাতে টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের বাজেট রাখতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখতে চায় না। তিনি বলেন, ইদানিং সবক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটা অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে সবাইকে একই ছাতার নিচে আসতে হবে।
বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইয়াছিন আলি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে আর্থিক শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হবে। তাই শুরু থেকেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং, স্কুল ব্যাংকিংসহ অন্যান্য বিষয়ে ধারণা দিতে হবে। এজন্য ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আর্থিক শিক্ষার কাঠামো গড়ে তোলা উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে শস্য বিমা চালু করার কথা বলা হলেও তা আলোর মুখ দেখছে না। একই সঙ্গে সবুজ অর্থায়নের জন্য কোন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে না। প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার মাধ্যমে মানব সম্পদের উন্নয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৭
এসই/জেডএম