গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ডিসেম্বর শেষে খেলাপিঋণ ৬ হাজার ৪ কোটি টাকা কমলেও এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে খেলাপিঋণ বেড়েছে প্রায় ১২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা।
ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশ করা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মোট ঋণ বিতরণ করেছে ৭ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এ খাতে খেলাপিঋণের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ খাতে খেলাপিঋণ ছিল ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৬৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বিতরণের বিপরীতে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৩৭ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ। তিন মাস আগে এই ছয়টি ব্যাংকের খেলাপিঋণ ছিল ৩৮ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা বা ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ।
এ সময়ে সরকারি মালিকানার দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১৯৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৫ হাজার ৪২৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। তিন মাস আগে এই ব্যাংক দু’টি খেলাপিঋণ ছিল ৫ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা বা ২৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাভ ৩ হাজার ৬০৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ২৯ হাজার ৩৯৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তিন মাস আগে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপিঋণ ছিল ৩৩ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ৩০ হাজার ৬২২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ২ হাজার ১৫৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ। তিন মাস আগে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপিঋণ ছিল ২ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৬ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খেলাপিঋণ বাড়লেও শেষ প্রান্তিকে আবার কমেছে। কারণ ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলো তাদের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাই সেখানে ভালো অবস্থান দেখাতেই বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে থাকে ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে অন্যতম হলো- খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বা নবায়ন। আর বছরের শেষ সময়ে এসে এই সুবিধা দেয়া-নেয়ার প্রবণতাও বাড়ে। এছাড়া শেষ সময়ে ঋণ আদায় কার্যক্রম জোরদার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
এসই/এসএইচ