ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

দেশের ৯০ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৮
দেশের ৯০ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স নেই আইটি অপারেশনস অব ব্যাংকস কর্মশালায় অতিথিরা। ছবি বাংলানিউজ

ঢাকা: ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ব্যাংকের কর্মীদেরও ব্যাপকহারে সাইবার নিরাপত্তা এবং সফটওয়্যার প্রশিক্ষণ বেড়েছে। তবে দেশের ৯০ শতাংশ ব্যাংকে পুরোপুরি আইটি গভর্নেন্স নেই।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণা প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।

এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯০ শতাংশ ব্যাংকের মধ্যে ৮ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।

৬০ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স বাস্তবায়নের কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। আর আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে ২২ শতাংশ ব্যাংকে।

ফলে আইটি অবকাঠামো, নিরাপত্তাসহ অনেক বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছে ব্যাংকগুলো। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি গাইডলাইন অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা।
 
মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘আইটি অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক কর্মশালায় উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
 
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহা: রাজী হাসান।
 
এসময় তিনি বলেন, সারা বিশ্বেই সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এতে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।
 
রাজি হাসান বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো মানের সফটওয়্যার তৈরি করছে। এরই মধ্যে দেশের ব্যাংকগুলোর একটি বড় অংশ দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করেছে। তাছাড়া বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে খরচের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় অনেক ঝামেলা রয়েছে।
 
কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর নাজনিন সুলতানা বলেন, যোগাযোগের অভাবে এক ব্যাংকের সমস্যা অন্যরা জানতে পারছে না। ফলে একই দুর্ঘটনা অন্য ব্যাংকেও ঘটছে। নিজেদের মধ্যে সমস্যাগুলো আলোচনা করলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে। এছাড়াও আইটি নিরাপত্তায় অভিজ্ঞ জনশক্তি তৈরি অত্যন্ত জরুরি। এখন ব্যাংকের সকল কর্মকর্তা এবং গ্রাহক পর্যায়েও সচেতনতা সৃষ্টির সময় এসেছে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক একেএম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার প্রকৌশলী তৈরি হয়েছে। তাদের একটু প্রশিক্ষণ দিলেই দেশের কাজে লাগানো সম্ভব। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিটি ব্যাংকের আইটি বিভাগকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের বিদেশে নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
 
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং এখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সরাসরি ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এই প্রতিযোগিতা ঝুঁকি তৈরি করবে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সব জায়গাতেই সাইবার ক্রাইম হচ্ছে। তাই ঝুঁকিমুক্ত থাকতে এ জায়গাতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।
 
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংক খাতে সাইবার ক্রাইম ঠেকাতে অভিজ্ঞ অডিট কর্মকর্তার প্রয়োজন। এছাড়া অভিজ্ঞ জনশক্তি তৈরিতে নির্দিষ্ট বাজেট থাকা দরকার। কারণ প্রশিক্ষণের জন্য ধার্য বাজেট অপচয় নয় বরং বিনিয়োগ।
 
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিআইবিএমের মুজাফফর আহমেদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা প্রমুখ।

এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৮
এসই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।