ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

খেলাপি ঋণের ৮৭ শতাংশই মন্দ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
খেলাপি ঋণের ৮৭ শতাংশই মন্দ

ঢাকা: ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৮৭ শতাংশ অর্থাৎ ৬৪ হাজার ৬১৮ কোটি টাকাই মন্দ বা ক্ষতিজনক ঋণ।

সোমবার (৩০ জুলাই) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, চার হাজার ১২২ কোটি টাকা আছে সন্দেহজনক ঋণ এবং পাঁচ হাজার ৫৬৩ কোটির টাকার নিচু মানের ঋণ।


 
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেলেও বছর শেষে ছয় হাজার সাত কোটি টাকা কমেছে।
 
তিন মাসের ব্যবধানে ২০১৭ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ১১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। একইভাবে জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭৪০ কোটি টাকা বেড়ে ৭৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকায় পৌঁছায়। সেপ্টেম্বর শেষে ৬ হাজার ১৬০ কোটি টাকা বেড়ে ৮০ হাজার ৩১০ কোটি টাকা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের খেলাপি ৩৬ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। বাকি মোট ব্যাংকের কাছে ৩৭ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। আর ১০ ব্যাংকের কাছে ৪৮ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। বাকি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ২৫ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা।
 
ব্যাংকিং খাতে ২০১৭ সালে মোট শ্রেণিকৃত ঋণের হার ছিল ৯.৩ শতাংশ এবং নীট শ্রেণিকৃত ঋণের (রক্ষিত প্রভিশন সমন্বয়ের পর) হার ২.২ শতাংশ ছিল। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট শ্রেণিকৃত ঋণের হার দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
 
২০১৭ সাল শেষে ব্যাংকিং খাতের সম্পদ বেড়েছে ১২.৪ শতাংশ, ঋণ ও অগ্রিম ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং আমানত বেড়েছে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। মোট আমানতের মধ্যে মেয়াদী আমানতের পরিমাণ অর্ধেকেরও বেশি যা ব্যাংকিং খাতের সামগ্রিক অর্থায়নে স্থিতিশীল উৎস হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
 
২০১৭ সালে ব্যাংকিং খাতে মূলধন ও ঝুঁকি-ভিত্তিক সম্পদের অনুপাত ১০.৮ শতাংশে অপরিবর্তিত ছিল যা আবশ্যকীয় ন্যূনতম হার (১০ শতাংশ) অপেক্ষা বেশি। ব্যাসেল-৩ মূলধন কাঠামোর আওতায় ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার (সিসিবি) এর নির্ধারিত মাত্রা শতকরা ০.৬২৫ এর বিপরীতে ব্যাংকিং খাত ০.৮০ শতাংশ সংরক্ষণ করেছে। এছাড়া, ব্যাংকিং খাতে লিভারেজ রেশিও ৪.৬ শতাংশ ছিল, যা আবশ্যকীয় মাত্রা ৩ শতাংশের তুলনায় বেশি।

ব্যাংকিং খাতের নিট মুনাফা (নিট আয় হতে সঞ্চিতি ও কর বাদে) ১৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্পদের বিপরীতে আয় হার অপরিবর্তিত রয়েছে এবং মূলধনের বিপরীতে আয়-হার ৭০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ১০.৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে রিপোর্টটির মোড়ক উম্মোচন করেন ডেপুটি গর্ভনর আহমেদ জামাল। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান নির্বাহীগণ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট এন্ড রেগুলেটরি অথরিটি ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮ আপডেট: ০৩০৩ ঘণ্টা
এসই/টিএ/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।