ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০ রবিউস সানি ১৪৪৬

ব্যাংকিং

অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বন্ধে ব্যাংকগুলোকে ফের নির্দেশনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৯
অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বন্ধে ব্যাংকগুলোকে ফের নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক

ঢাকা: পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনতে আবারও ব্যাংকগুলোকে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা ধরে রাখার পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বন্ধ করলে ব্যাংকের আয় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা অক্ষুণ্ন রাখতে বিভিন্ন খাতে ব্যয়ে সাশ্রয়ী মনোভাব পোষণ করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

অপ্রয়োজনীয় ব্যয় পরিহার ব্যাংকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। একইসঙ্গে ব্যবসার প্রসারে সুদ/চার্জ/ফি ইত্যাদি প্রতিযোগিতামূলক করার সক্ষমতা বাড়ায়।

কিন্তু সম্প্রতি কোনো কোনো ব্যাংকে নানাবিধ উচ্চ ব্যয় নির্বাহের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ব্যাংক-কোম্পানির অর্থে সম্পদ ক্রয় ও অফিস স্পেস ভাড়ার ক্ষেত্রে উচ্চ ব্যয়, পর্ষদ চেয়ারম্যান, পরিচালক, প্রধান নির্বাহী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক শাখার সাজসজ্জায় উচ্চ ব্যয়, ব্যাংকের গাড়ির যথেচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে।

ঢাকার বাইরে পরিচালনা পর্ষদ ও পর্ষদের সহায়ক বিভিন্ন কমিটির সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উচ্চ ব্যয় নির্বাহ, বিজনেস ডেভেলপমেন্টের নামে বাহুল্য খরচ, বিজ্ঞাপন ও ব্র্যান্ডিংয়ের নামে অতিরিক্ত ব্যয়, বিলাসী আপ্যায়ন, যথেচ্ছ স্টেশনারি ও বিবিধ খরচ ইত্যাদি বিষয় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এ ধরনের প্রবণতা নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে স্থায়ী সম্পদ ক্রয় এবং অফিস স্পেস ভাড়া-ইজারা নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের ধারণকৃত স্থাবর/অস্থাবর সম্পদের মোট পরিমাণ (বুক ভ্যালু) ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের শতকরা ৩০ ভাগে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপনের অনুশাসনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া অফিস স্পেস ভাড়া-ইজারা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রকৃত বাজার দর যাচাই করে প্রতিযোগিতামূলক ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। এ বিষয়ে ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপনের যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়াও ৫০ লাখ টাকার বেশি দামের মোটরকার ও এক কোটি টাকার বেশি দামের জিপ ব্যাংক-কোম্পানির অর্থে ক্রয় করা যাবে না। তবে ব্যাংক-কোম্পানির রেটিটেন্স বহনের কাজে বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা কর্তৃক ব্যবহৃত নিরাপত্তা-যানবাহনের অনুরূপ গাড়ি ক্রয় করা যাবে।
 
অন্য কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লিজ ফাইন্যান্সিং সুবিধা গ্রহণ করে মোটরগাড়ি সংগ্রহ করা যাবে না। ব্যাংক-কোম্পানির অর্থে ক্রয় করা মোটরযান বহরে যানবাহনের সংখ্যার প্রবৃদ্ধি ক্রমান্বয়ে কমিয়ে ব্যাংকের জনবল ও অফিস-শাখার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে হবে।
 
দেশীয়ভাবে সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়ি ক্রয়ের মাধ্যমে এ খাতে ব্যয়ের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ১০ ভাগের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। সাধারণভাবে পর্ষদ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীর জন্য সার্বক্ষণিক গাড়িসহ সব যানবাহন অন্তত পাঁচ বছর ব্যবহারের পর প্রতিস্থাপনযোগ্য হবে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ব্যতীত অন্যান্য পরিচালকরা ব্যাংক-কোম্পানির অর্থে ক্রয় করা গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না।  

ব্যাংকের প্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কর্মকর্তারা গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না। একইসঙ্গে যেসব কর্মকর্তা গাড়ি ক্রয়ের ঋণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করেন, তারাও ব্যাংকের গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না।
 
মোটরযান জ্বালানি খরচে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। মোটরযান ব্যবহার ও পরিচালন ব্যয়ের তথ্য সঠিকভাবে পর্ষদ সভায় ও বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থাপন করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৯
এসই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।