বুধবার (১১ মার্চ) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর এ নতুন মডিউলটি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলেও ইন্টারনাল কিছু কাজ বাকি থাকায় এ কার্যক্রম আগামী ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশের প্রধান ডাকঘরগুলোতে শুরু হবে। একইসঙ্গে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের আগের সুদহার বহাল করা হবে ১৭ মার্চ।
তিনি বলেন, বিভিন্ন রকমের সঞ্চয়পত্র অটোমেশনে চলে গেছি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই সঞ্চয়পত্র স্কিমটি দেখতে চাই যাদের জন্য করা হয়েছে তারা যেন উপকৃত হন। কারো স্বার্থে আমি হাত দেইনি। ডাক ডিপোজিট ও ডিমান্ড ডিপোজিট অটোমেশনে যাবো, ১৭ মার্চ সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে শুরু করতে পারবো পূর্ণমাত্রায়।
‘২০০৮ সালে শেখ হাসিনা দায়িত্ব না নিলে পোস্ট অফিস দেখতে পারতেন না। ফিন্যান্সিয়াল টুলস আমাদের নেই, গ্রামীণ লোকজন কোথায় টাকা নিয়ে যাবে, টাকা কি বালিশের নিচে রাখবে। গ্রামীণ ঐহিত্য ধরে রাখতে চাইলে পোস্টাল বিভাগ আমরা বাতিল করতে পারবো না। সবার হাত ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি আবার দাঁড়াবে। যা করবো মানুষের স্বার্থে করবো, যা করবো সেটি যেন মিসউইজ না হয়। কারো কোনো সুবিধা হরণ করা হয়নি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যাবে সুবিধা আরও বাড়ানো হয়েছে। ’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ডিমান্ড ডিপোজিট ৭ দশমিক ৫ এবং ফিক্সড টাইমে হবে ১১ পয়েন্ট ২৮ যা আগের রেইট তাই থাকছে। একটি নিয়মের মধ্যে আনতে চাচ্ছি মিসইউজ করুক তা চাই না। যে আয়টা করবে এখন থেকে তা ট্যাক্স ফ্রি না, আয়কর দিতে হবে এজন্য টিন নম্বর ও ন্যাশনাল আইডি নিচ্ছি। এনআইডি নিচ্ছি তাদের চিহ্নিত করার জন্য কত টাকা করলো অতিরিক্ত করলো কিনা। দেশের যেকোনো জায়গায় করলে লিমিট ক্রস করতে পারবে না এবং ট্যাক্স এর আওতায় আসবে। সরকার রাজস্ব আয় করবে।
ডাক বিভাগকে ডিজিটাল কর্মাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডাক বিভাগের তৃণমূল পর্যন্ত নেটওয়ার্ক রয়েছে যা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের নিয়ে ডাকবিভাগ থাকতে চায়। ভবিষ্যতে যে অর্থব্যবস্থা থাকবে তা ডিজিটাল ব্যবস্থা ছাড়া আর কিছু থাকবে না।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে সুদহার প্রায় অর্ধেক করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্র অনুযায়ী সুদের হার কমেছে ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমের মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাবে। সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে সুদের হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার হবে ৬ শতাংশ, যা এতদিন ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ ছিল। মেয়াদপূর্তির আগে ভাঙানোর ক্ষেত্রে এক বছরের জন্য সুদ মিলবে ৫ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। দুই বছরের ক্ষেত্রে তা সাড়ে ৫ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ।
ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমে সুদহার অর্ধেক করায় সংসদের ভেতরে ও বাইরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনার মুখে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।
সে বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৭ মার্চের মধ্যে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার আগের মতো ১১ দশমিক ২৮-এ আবারও ফিরে যাবে।
বাংলাদেশ সময়:১৩৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২০
জিসিজি/এইচএডি/