শ্রীমঙ্গল: নামটি তার হাইড্রেনজিয়া। মায়ের মুখে শুনে শুনে মস্তিষ্কে গেঁথে যাওয়া একটি নাম।
তখন ১৯৮৫ সাল। আমার বাবা ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চম্পা রায় চা বাগানের ম্যানেজার। আমাদের বড় বাংলোতে মায়ের পরিচর্যায় বেড়ে উঠতো নানা রকমের ফুল। তাদের বাহারি রং হৃদয়কে করতো আন্দোলিত। রুপসী হাইড্রেনজিয়ার সঙ্গে তখন থেকেই আমার পরিচয়।
ফুলটির বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্যের কারণে সে বিশেষ হয়ে উঠেছিল। আর তা হলো তার রং বদলানোর স্বভাব। ফুলটি ফোটার সময় যে রং থাকে, ক’দিনের মধ্যেই সে রং বদলে ফেলে। ফুলটি ফোটার সময় এর রং থাকে বেগুনি। কয়েকদিন পর হয়ে যায় হালকা গোলাপি এবং আরও কয়েকদিন পর হয়ে ওঠে সাদা। তাই বলা যায় এ গাছটিতে তিন রঙের ফুল হয়।
হাইড্রেনজিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম Hydrangea macrophylla এবং এটি Hydrangeaceae পরিবারভুক্ত ফুল। এ ফুলগাছটি দুই থেকে তিন ফুট দীর্ঘ হয়।
প্রকৃতি গবেষক ও লেখক মোকারম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, হাইড্রেনজিয়ার জন্ম চীন ও জাপানে। সাধারণত টবেই চাষ করা হয় ফুলটি। ফুলের মৌসুমে বিভিন্ন নার্সারিতে দেখা যায় ফুলগাছটি। এর বংশবৃদ্ধি হয় কাটিং ও মূলের গেঁড় থেকে। অল্প রোদ, ছায়াঘর ও স্যাঁতসেঁতে জায়গা এর জন্য উপযোগী।
তিনি জানান, হাইড্রেনজিয়ার মঞ্জরি গুচ্ছবদ্ধ, বেশ বড় ও আয়তাকার। পাপড়ির সংখ্যা চার বা ততোধিক, মসৃণ ও পুরু। আমাদের দেশে সাদা-গোলাপি মেশানো হাইড্রেনজিয়া হর্টেনসিস ভ্যারাইটি জাতটি সহজলভ্য। এটি জাপানের Hydrangea macrophylla জাতের শঙ্কর। হাইড্রেনজিয়ার প্রায় ৮০টি জাতের অধিকাংশই শীতপ্রধান এলাকায় সহজলভ্য।
এ প্রকৃতি গবেষক আরও জানান, ফুলটির ফোটার মৌসুম বসন্ত ও গ্রীষ্ম। আমাদের দেশে সাধারণত বসন্তের শেষভাগ থেকেই ফুটতে শুরু করে ফুলটি। নজরকাঁড়া সৌন্দর্যের কারণে কদর বাড়ছে চিত্তাকর্ষক হাইড্রেনজিয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৫
এসইউ