ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

শ্রীমঙ্গলে পরিবেশবান্ধব কৃষি কার্যক্রম শুরু

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৬
শ্রীমঙ্গলে পরিবেশবান্ধব কৃষি কার্যক্রম শুরু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): সারিবদ্ধভাবে উঠানে বসে আছেন কৃষকরা। হাতে কলম আর মাটিতে রাখা একটি বিশেষ ধরনের খাতা।

সবার মাথায় কালো রঙের টুপি। কলম, খাতা আর টুপি তাদের দেওয়া হয়েছে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে। আজ তাদের প্রথম ‘ক্লাস’।
 
তারা প্রত্যেকেই বিষমুক্ত পরিবেশবান্ধব কৃষির চাষাবাদ পদ্ধতি শিখতে এসেছেন।
 
শ্রীমঙ্গলে আইপিএম কৃষকের মাঠস্কুল উদ্বোধনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকদের মধ্যে পরিবেশবান্ধব কৃষি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা হাতে-কলমে কৃষি প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন।
 
শ্রীমঙ্গল উপজেলা মির্জাপুর ইউনিয়নের পূর্ব যাত্রাপাশা গ্রামের দিনবন্ধু ভৌমিকের বাড়ির উঠানে সম্প্রতি কৃষকদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের এ শিক্ষা শুরু হয়েছে।
 
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা বা ইন্টিগ্রেটেড পেস্ট ম্যানেজমেন্টের (আইপিএম) মাধ্যমে কৃষকদের বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক সার ব্যবহারসহ পরিবেশবান্ধব চাষাবাদের বিভিন্ন কলাকৌশলের সফল প্রয়োগ শেখানো হচ্ছে।
 
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন বাংলানিউজকে বলেন, পরিবেশবান্ধব কৃষি ও নিরাপদ খাদ্যের জন্যই ইন্টিগ্রেটেড পেস্ট ম্যানেজমেন্ট বা আইপিএম পদ্ধতি। বিশেষ এ পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ফলে কৃষকরা বাইলাই নাশকের যুক্তিসংযত ব্যবহার, জৈবিক ব্যবস্থাপনা, উপকারী পোকামাকড় ও প্রাণী সংরক্ষণসহ কৃষির নানা বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিশেষ অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।
 
তিনি আরো বলেন, কৃষকরা খেতে পোকা দেখলেই কীটনাশক ডিলারের কাছে চলে যান। ডিলারের পরামর্শ মতো বিষ কিনে এনে খেতে প্রয়োগ করেন। এর ফলে মাটি যেমন তার উর্বরতা শক্তি হারায় তেমনি, বিষ প্রয়োগের ফলে ওই ফসলটিও মারাত্মকভাবে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
 
উদাহরণ দিয়ে নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, যেমন ধরুণ বরবটির কথা। কোনো কৃষক সকালে তার বরবটিতে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করলেন; আর বিকেলেই ওই বরবটিগুলো গাছ থেকে ছিড়ে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে গেলেন। ফলে ওই সবজিতে মারাত্মভাবে বিষ রয়ে গেলো।
 
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, আইপিএম কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্প, গত বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) পূর্ব যাত্রাপাশা আইপিএম কৃষক মাঠস্কুলের উদ্বোধন হয়। দশজন নারী এবং পনের জন পুরুষ কৃষক এ ব্যবহারিক পাঠদানের সুযোগ পাবেন।
 
তিনি আরো বলেন, সুস্থ বীজ ও চারা ব্যবহার, সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ, সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনা, সঠিক দূরত্বে রোপন, সমকালীন চাষাবাদ প্রভৃতি হলো সবজি ফসলে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা। এসব সম্পর্কে আমরা তাদের সরাসরি প্রশিক্ষণ দেবো।
 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় স্থানীয় কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে চলবে এ কার্যক্রম।

চৌদ্দ সপ্তাহ পর কৃষকদের এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সমাপ্ত হবে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৬
বিবিবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।