ঢাকা: উপকূলীয় এলাকা এবং সারাদেশের হোটেল-রেস্টুরেন্টে এক বছরের মধ্যে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ভার্চ্যুয়াল সমন্বয় সভায় ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী একথা জানান।
পরিবেশ সচিব জিয়াউল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, অধীন দপ্তর/সংস্থা প্রধান এবং বিভাগীয় কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, প্লাস্টিক/পলিথিন দূষণ নিয়ন্ত্রণে নিষিদ্ধ ঘোষিত অবৈধ পলিথিন/প্লস্টিক ব্যাগের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, উপকূলীয় এলাকায় এক বছরের মধ্যে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ এবং একই সময়ে সারাদেশের হোটেল, রেস্টুরেন্টে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, দেশের পরিবেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রকল্প ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে দখল করা সরকারি বনভূমি পুনরুদ্ধার, পাহাড় ও টিলা কর্তন রোধ, অবৈধ ইটভাটা এবং নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছে সরকার। স্থানীয় প্রশাসন ও সবার সহযোগিতায় দেশের পরিবেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার অর্জনের বিষয়টি মনিটরিং এবং যানবাহনের সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।
‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা জোরদারকরণ এবং প্রয়োজন অনুসারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। ’
তিনি আরও বলেন, জলাধার ও নদী ভরাট এবং নদী দূষণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। শিল্প-কারখানা, নৌযান ও মনুষ্য-সৃষ্ট বর্জ্য সরাসরি নদীতে নিঃসরণ প্রতিরোধে নজরদারি জোরদারসহ প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পর্যালোচনা ও বিসিসিটির বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প নিয়মিত পরিদর্শনসহ এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সংরক্ষিত বন ব্যতীত অন্য বনভূমি (রক্ষিত বনভূমি, অর্পিত বনভূমি) এলাকায় খাসজমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন এবং প্রয়োজনে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বনভূমি জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে চলমান ক্র্যাশ প্রোগ্রামে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের প্রতি আহ্বান জানান। অবৈধভাবে বন্দোবস্ত করা বনভূমি উদ্ধারে আইনানুগ ব্যবস্থা ও বনভূমি যথাযথভাবে রেকর্ডভুক্তি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্যও বিভাগীয় কমিশনারদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বন, শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের মালিকানাধীন আনুমানিক ২৫-৩০ একর রাবার বাগান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) কর্তৃপক্ষের অবৈধ দখল থেকে উদ্ধারের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপস্থিত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সব কাজে বিভাগীয় কমিশনারদের সক্রিয় সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২১
এমআইএইচ/এএ