ঢাকা, বুধবার, ১১ চৈত্র ১৪৩১, ২৬ মার্চ ২০২৫, ২৫ রমজান ১৪৪৬

ক্রিকেট

তামিমের সার্বিক অবস্থা ‘আশাব্যঞ্জক’, তবে এখনই ‘মুভ করা রিস্কি’

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
তামিমের সার্বিক অবস্থা ‘আশাব্যঞ্জক’, তবে এখনই ‘মুভ করা রিস্কি’ তামিম ইকবাল/সংগৃহীত ছবি

হার্টে রিং পরানোর পর থেকে ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হয়েছে তামিম ইকবালের। আপাতত শঙ্কামুক্ত জাতীয় দলের এই সাবেক অধিনায়ক।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তার সার্বিক অবস্থা 'আশাব্যঞ্জক'। তবে এখনই তাকে অন্য কোথাও 'মুভ' করা যাবে না।

মাঠে হার্ট অ্যাটাকের পর থেকে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশালাইডজ হাসপাতালে আছেন তামিম। তার সর্বশেষ অবস্থা জানাতে আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন সেখানকার চিকিৎসকরা। তারা জানিয়েছেন, তামিম 'ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড' পেরিয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে আরও কয়েকদিন সতর্ক থাকতে হবে তাকে।  

কাল সারা রাত সিসিইউতে পর্যবেক্ষণে থাকার পর আজ সকালে কেবিনে নেওয়া হয়েছে তামিমকে। সেখানে তিনি স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন, খাবার খেয়েছেন এবং হাঁটার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে।  

তামিমের চিকিৎসার খোঁজ নিতে দুপুর ১২টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু জাফর যান সাভারের কেপিজে হাসপাতালে। তিনি জানান, তামিম এখন শঙ্কামুক্ত। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিন মাস পরেই হয়তো খেলায় ফিরতে পারবেন তামিম।

তামিমের ডিপিএল ক্লাব মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তামিমের অবস্থা ঠিক থাকলে সন্ধ্যা বা রাতের দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। তবে এই মুহূর্তে তাকে অন্য কোথাও 'মুভ করা খুবই রিস্কি' বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি তামিমকে জানানোও হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালের মিডিয়া পরিচালক ড. রাজীব হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'একটা ক্রিটিক্যাল পিরিয়ডে তিনি ছিলেন। পুরোপুরি না হলেও এই ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড পেরিয়ে এসেছি আমরা। উনি (তামিম) সুস্থ আছেন, খাওয়া দাওয়া করছেন। সবার সঙ্গে কথা বলছেন। আমরা খুব সুন্দরভাবে উনাকে ছেড়ে দিতে পারব। কখন ছেড়ে দেব এটা উনাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত। '

হাসপাতালের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে তামিমের হার্টে যে পিসিআই হয়েছে (হার্টের ব্লক খোলার চিকিৎসা পদ্ধতি), তাতে কখনো কখনো একটু রিয়্যাকশন হতে পারে। যে রিংটা লাগানো হয়েছে তা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, ডাক্তারি ভাষায় যাকে থ্রম্বোসিস বলা হয়। যদিও পরিসংখ্যানে এটি হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে সেই আশঙ্কা বা ঝুঁকি রয়েছে। ওই ঝুঁকি নিয়ে তামিমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথা হয়েছে।

এর আগে গতকাল সকালের দিকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন তামিম। বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে খেলা শুরুর আগে নির্ধারিত সময়ে টসও করেছেন অধিনায়ক তামিম। কিন্তু পরে আর ফিল্ডিংয়ে নামতে পারেননি তিনি।  

খেলা শুরুর আগে বুকে ব্যথা অনুভব করায় বিকেএসপির কাছেই বেগম ফজিলাতুন্নেসা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এনজিওগ্রাম করে জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন তামিম। তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। হাসপাতাল থেকে তামিমকে ঢাকায় আনার চেষ্টা করা হয় হেলিকপ্টার যোগে। তবে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তা করা যায়নি।  

হার্ট অ্যাটাকের পর তামিমের শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়েছিল। হার্ট কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। যে কারণে তাকে ২২ মিনিট ধরে সিপিআর এবং ৩ বার ডিসি শক দিতে হয়েছে। তামিম যে পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে তার ফেরার সম্ভাবনা ছিল একেবারেই ক্ষীণ। খুব কম রোগীই সেখান থেকে ফিরে আসতে পারেন। পরে ওই হাসপাতালেই তার হার্টে রিং পরানো হয়। হার্টে রিং পরানোর পর তামিমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। জ্ঞানও ফেরে দ্রুতই। এখন তিনি শঙ্কামুক্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।