ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিকেএসপিতে আরেক সাকিব!

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৫
বিকেএসপিতে আরেক সাকিব! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: শিষ্যদের স্কিল দেখেই কোচরা বুঝতে পারেন কে কতদূর যাবে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ক্ষেত্রেও ঘটেছিল এমনটা।

বিকেএসপির হেড কোচ (ক্রিকেট) মাসুদ হাসান সাকিবের খেলা দেখেই বুঝতে পেরেছিলেন সাকিব অন্যদের থেকে ‍আলাদা কিছু।

‘সাকিবকে দুইবার কিছু দেখিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হতোনা। একটু দেখিয়ে দিলেই বুঝে নিত সব। সে ট্রেনিংয়ের ব্যাপারে সবসময়ই সিরিয়াস থাকতো বলে আমাদের কোচেদের পরিশ্রম কম হতো’- সাকিবকে দেখাটা এমনই ছিল বিকেএসপির কোচ মাসুদ হাসানের।

বিকেএসপির কোচ হওয়ায় তরুণ প্রতিভাদের কাছে থেকে দেখতে পারছেন, গড়তে পারছেন তিনি। ভবিষ্যত ক্রিকেটারদের পাইপলাইন তো তাদের হাতেই। সাকিবের মতো সম্ভাবনাময়ী আর কেউ কি আছে বিকেএসপিতে, যার স্কিল দেখলে বোঝা যায় একদিন বড় ক্রিকেটার হবে- প্রশ্নটা শুনে এড়িয়েই যেতে চেয়েছিলেন সদা হাশিখুশি এই কোচ।

বার বার অনুরোধে শেষ পর্যন্ত ঢেঁকি গিলেই ফেললেন! জানিয়ে দিলেন বিকেএসপির ভবিষ্যত সাকিবদের কথা। ‘তিন-চারজন ক্রিকেটার আছে এখানে, যাদের সম্ভাবনা আছে বড় ক্রিকেটার হওয়ার। তাদের অন্যতম একজন ‍হাসান মুরাদ। খুব পরিশ্রমী একজন ক্রিকেটার। বাঁহাতি স্পিনার। ওকে ভালোভাবে গড়ার চেষ্টা করছি আমরা। ’

সাকিব ‍আল হাসান নামটির শেষ অংশ দিয়ে মুরাদের নামের শুরু। দুটো নামেই যুক্ত ‘হাসান’। পার্থক্য একটি। সাকিব অলরাউন্ডার; মুরাদ শুধুই বাঁহাতি স্পিনার। বোলিংয়ের হাতটা আরেকটু পাকা করে ব্যাটিং নিয়েই কাজ শুরু করবেন বলে জানালেন বিকেএসপির দশম শ্রেণির ছাত্র হাসান মুরাদ।

সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে বেড়ে ওঠা উঠতি এ ক্রিকেটারের। ক্রিকেটের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও পরিশ্রম তাকে এনে দিয়েছে ক্রিকেটার হওয়ার আদর্শ স্থান বিকেএসপিতে। ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টিতে প্রলুব্ধ নন এ তরুণ ক্রিকেটার। টেস্ট ক্রিকেটই তাকে বেশি টানে। বড় টেস্ট ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছাতেই পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বিকেএসপির সবুজ চত্ত্বরে।

শুরুর কথা: ২০১২ সালে সাভার বিকেএসপিতে ভর্তি হই। কক্সবাজার থাকাকালীন সময়ে চট্টগ্রামে আঞ্চলিক শাখায় ট্রায়াল দিয়ে বরিশালে তিন মাসের  ক্যাম্পে যোগ দেই। এরপর বিকেএসপিতে পাঁচদিনের ক্যাম্প হয়।   ভালো করায় টিকে যাই। সেই থেকে এখানেই আছি।

বয়সভিত্তিক দল: এখন অনূর্ধ্ব-১৮ তে আছি। ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ ডিভিশন খেলেছি দু’বার। ওখান থেকে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলেছি।

অনুশীলনে বেশি গুরুত্ব: বোলিংটা অনেক ভালো হচ্ছে। কোচরা আমাকে নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছেন। গত দুইমাস ধরে ফুটওয়ার্ক, ল্যান্ডিং, ফলো-থ্রু ও ছোট ছোট বিভিন্ন কাজ হচ্ছে। ৭-৮ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামি। ব্যাটিং  নিয়েও কাজ করতে চাই, তবে তার আগে বোলিংয়ে আরও কিছু কাজ বাকি আছে।

লংগার ভার্সন: আামাদের (বয়সভিত্তিক) সব খেলাই লংগার ভার্সন হয়। বাংলাদেশ দলে টেস্ট প্লেয়ার এখন বেশি দরকার।   টেস্ট ক্রিকেট আমার ভালো লাগে। ভালো টেস্ট ক্রিকেটার হতে চাই।

বিশেষ গুন: আমি অনেকক্ষণ ধরে এক জায়গায় বল করতে পারি। এমন জায়গায় বল ফেলতে পারি, ব্যাটসম্যানকে ওই জায়গাটায় খেলতে হবেই। খেলবে না কেন খেলতে হবেই! এ জন্য লংগার ভার্সন অনেক ভালো লাগে।  

স্বপ্নের পেছনে ছোটা:  স্যাররা বলেন প্র্যাকটিস করার পর রাতে শুয়ে ভিজুয়্যালাইজেশন করতে। প্র্যাকটিস করে আজ কি নিয়ে ফিরলাম এগুলো নিয়ে ভাবি। । উন্নতি কতদূর হলো...। আর বিকেএসপি থেকে ডায়েরি দেয়া হয় সেটাতে প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন লিখে রাখি। তিন বছর ধরে নিয়মিত ডায়েরি লিখছি।

আত্মবিশ্বাস: ক্রিকেটের জন্য সবকিছু করতে পারি। আমি আদর্শ ক্রিকেটার হতে চাই। আমার স্বপ্ন জাতীয় দলে খেলার। চেষ্টা করছি। আমি শতভাগ আত্মবিশ্বাসী।

বিকেএসপি নিয়ে: এটা অনেক বড় একটি প্রতিষ্ঠান। বিকেএসপিতে পড়ি বলে সবাই (আত্মীয়-বন্ধুরা) স্বপ্ন দেখে একদিন  জাতীয় দলের খেলোয়াড় হবো। বিকেএসপিতে পড়ছি বলেই স্বপ্নটা এখনও লালন করতে পারছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৫
এসকে/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।