নতুন সূচি অনুযায়ী, ভারত এবং পাকিস্তান আগামী শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সুপার ফোরের ম্যাচে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে। এর পরদিন আবার ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে।
এর মানে হচ্ছে, বাংলাদেশকে বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আবুধাবিতে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলেই শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্য দুবাইয়ে হাজির হতে হবে। তারপর আবার রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে আবুধাবিতে যেতে হবে মাশরাফিদের। তবে কিছুটা সুবিধাও হয়েছে। কারণ, নতুন সূচিতে আবুধাবিতে ভ্রমণ একদিন কমেছে বাংলাদেশের। আগের সূচিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে চারদিনে তিন ম্যাচ খেলতে হতো মাশরাফিদের।
মূল ক্ষতিটা হয়েছে পাকিস্তানের। আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলার পর ছুটতে হবে দুবাইয়ে। দুই দিন পরেই আবার আবুধাবিতে ফিরে বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে হবে সরফরাজদের।
নতুন সূচিতে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে ভারতের। এর আগের সূচিতে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হলেই শুধু একই ভেন্যু তথা দুবাইয়ে খেলার সুযোগ রাখা হয়েছিল। কিন্তু ভারতের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া এখনও নিশ্চিত না হলেও ভ্রমণ ক্লান্তি থেকে বাঁচিয়ে দিতে তাদের সকল ম্যাচ রাখা হয়েছে দুবাইয়ে।
শুধু তাই না, ভারত যদি ফাইনালে পা রাখে তাহলেও দুবাই ছাড়তে হবে না তাদের। কারণ, ফাইনালের ভেন্যু দুবাই। বাংলাদেশকে গ্রুপের রানার্স আপ গণ্য করে করা এই সূচিতে ‘আয়োজক’ ভারতকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মাঠে অনুশীলনে নেমে এশিয়া কাপের এই পরিবর্তিত সূচি সম্পর্কে জানতে পারে বাংলাদেশ দল। বর্তমান সূচি অনুযায়ী আগামীকাল (২০ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি এখন অর্থহীন হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এতে হতাশ মাশরাফি।
‘প্রথম থেকেই আমাদের পরিকল্পনায় ছিল যে আমরা যদি শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ম্যাচে হারাতে পারলে আমরা হয়ত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে এগিয়ে যাব। এরপর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে গ্রুপ ‘এ’ রানার্স আপ দলের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ খেলব সুপার ফোরে। কিন্তু আজকে সকাল থেকে জানতে পারছি, আমরা আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতি আর হারি, আমরা ‘বি ২’ হয়ে গেছি। এটা অবশ্যই হতাশার। ’
‘অবশ্যই আন্তর্জাতিক ম্যাচের মূল্য আছে। কিন্তু গ্রুপ ম্যাচ বলেন বা যাই বলেন, একটা নিয়ম থাকে টুর্নামেন্টের। সেই নিয়মের বাইরে চলে যাচ্ছি আমরা। এটাই হতাশার। ’
'আমার মনে হয় না কেউ ভালোভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে। এমনকি একজন পাগলও এটা ভালোভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে না। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে গ্রুপ স্টেজের আগের দিন শুনছেন যে আপনি গ্রুপে দ্বিতীয়। '
এভাবে সূচি বদলে যাওয়ায় বাংলাদেশ দলের পরিকল্পনা নতুন করে সাজাতে হচ্ছে। তীব্র গরমে পরপর ম্যাচ খেলতে গিয়ে দলের জন্য যে বাড়তি চাপ হয়ে যাবে তাও বললেন মাশরাফি।
‘যে ম্যাচের সবচেয়ে বেশি মূল্য আছে (সুপার ফোরের ম্যাচ)। সেখানে আমরা পর পর ম্যাচ খেলছি। আমাদের ২৪ জন প্লেয়ার নাই যে একাদশ পুরো বদল করে নামাবো। ’
‘২০ তারিখে খেলা এবং সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচটাও ২১ তারিখে খেলা। যেমন ধরেন কাল যদি পরে ফিল্ডিং করি এবং এরপরের ম্যাচে প্রথমে ফিল্ডিং করি। তাহলে আমাদের ১০ ঘণ্টাও রিকোভারির টাইম নাই। আর সোয়েটিং রিকোভারি করতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টাও লাগে। ’
‘ভাবছিলাম গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হলে দেখা যাক কোন প্রতিপক্ষকে পাই। এই হিসাব-নিকাশের আর কোন সুযোগ নাই। সব কিছু থেকেই খারাপ জিনিসটাই আমাদের দিকে এসেছে। আসলে এই সিদ্ধান্তটা মানসিকভাবে কতটা প্রভাব ফেলছে এটা নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। ’
'ছয়দিনে চারটি ম্যাচ খেলতে হবে। পরের তিনটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই গরমে ৬ দিনে ৪টি ম্যাচ, আমি নিশ্চিত যে রাজি হবে না কোনো দল। বলতে পারেন সব দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু আমাদের ব্যাপারটা হলো যে, ২১ তারিখে এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, তার আগের রাতে গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচ খেলতে হবে। সুপার ফোরে প্রথম ম্যাচটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই ম্যাচে আমরা সবাই শারীরিকভাবে শতভাগ থাকতে না পারলে কাজটা কঠিন হয়ে যায়। '
ভারতের সুবিধার্থে গ্রুপ রানার্স আপ বাংলাদেশ!
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
এমএইচএম