অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ঐতিহ্য অনুযায়ী গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে ঘরের মাঠে সিরিজ আয়োজন করা হয়। এবারও তাদের মাটিতে খেলতে যাবে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।
২০২০ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে ভারতের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে যাবে অস্ট্রেলিয়া। এমন ঘটনা সচরাচর ঘটতে দেখা যায় না। ক্রিকেট তাই ভারতের কাছে এই সিরিজের সময়সূচী পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিল সিএ। কিন্তু তাতে সায় দেয়নি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। বরং সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
অজিদের অনুরোধের জবাবে উল্টো সফরের সময়সূচী আরও এগিয়ে এনে জানুয়ারির মাঝামাঝি নির্ধারণ করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এতে ভীষণ বিপাকে পড়ে গেছে অজি ক্রিকেট বোর্ড। এখন তাদের ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পূর্বনির্ধারিত সিরিজ স্থগিত করে দিতে হচ্ছে। নতুন বছরের একদম শুরুতে সিডনিতে অনুষ্ঠেয় টেস্ট ম্যাচের পরই ওই সিরিজ আয়োজনের কথা ছিল।
এদিকে সিরিজ স্থগিতের বিষয়ে রাজি হয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। এতে দুই দলের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী চ্যাপেল-হেডলি ট্রফি সময়মত মাঠে গড়াচ্ছে না। এটাও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় ধাক্কা। এটাই হতো গ্রীষ্মে অজিদের ঘরের মাঠে একমাত্র ওয়ানডে সিরিজ। ফলে গ্রীষ্মে ঘরের মাঠে কোনো ওয়ানডে সিরিজ খেলা হচ্ছে না স্মিথ-ওয়ার্নারদের।
সেই ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি গ্রীষ্মে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ আয়োজন করে আসছে অস্ট্রেলিয়া। এই সিরিজ থেকে তাদের আয়ও হতো বেশ। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার কোনো সুযোগ নেই। কেননা ভারতের সঙ্গে সিরিজ স্থগিত করা মানে মিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া। ফলে বিসিসিআই’র প্রস্তাবে রাজি না হয়েও কোনো উপায় ছিল না তাদের।
ভারতের মাটিতে ওই সফরের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হবে অস্ট্রেলিয়ার ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগ বিগ ব্যাশ। কেননা সফরের মাঝেই শুরু হবে বিগ ব্যাশের আসর। এতে সফরে থাকা অজি তারকারা এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন না। গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল, স্টিভ স্মিথ কিংবা ডেভিড ওয়ার্নারদের ছাড়া এই লিগ যে জমবে না সেটা না বললেও চলে। কারণ পরেরবার বিগ ব্যাশের ম্যাচের সংখ্যা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
আগামী গ্রীষ্মে অবশ্য অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে পাকিস্তান। কিন্তু সেটা শুধুই ২ টেস্ট ও ৩ টি-টোয়েন্টির ম্যাচের সিরিজ খেলার জন্য। আর মৌসুমের শুরুর দিকে ৩ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য যাবে শ্রীলঙ্কা। আগামী বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতি সফরে যাবে ভারতও। ফলে ভারতের কথা না শুনলে এই সফর নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে সিএ’কে। ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার যাকে বলে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অনুরোধ এই প্রথম প্রত্যাখ্যান করলো ভারত বিষয়টা মোটেই এমন নয়। এর আগে গত গ্রীষ্মে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল বিসিসিআই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
এমএইচএম