এই নিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারার রেকর্ড গড়েছে ভারত। এখন পর্যন্ত মোট ৪২৩টি ওয়ানডে ম্যাচ হেরেছে দলটি।
ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) অকল্যান্ডে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ২৫১ রানে অল আউট হয়ে ২২ রানে ম্যাচ হারে ভারত।
২০১৪ সালের পর এই প্রথম ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতল নিউজিল্যান্ড। এর আগে ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে সিরিজ জিতেছিল ভারত। এছাড়া এই ম্যাচে একটা রেকর্ড গড়েছেন নিউজিল্যান্ডের কাইল জেমিয়েসন। ওয়ানডে অভিষেকেই ম্যাচ সেরা হওয়া মাত্র দ্বিতীয় কিউই ক্রিকেটার এখন এই কিউই পেস অলরাউন্ডার। এর আগে ২০১১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারারেতে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন রব নিকোল।
লক্ষ্য তাড়ায় ভারতের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। দলীয় ২১ রানে মায়াঙ্ক আগারওয়াল বিদায় নেন। এরপর নিয়মিত ওপেনার রোহিত শর্মা না থাকায় এই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া পৃথ্বী শ ১৯ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় ভারত।
ভারতের সবচেয়ে বড় ভরসা বিরাট কোহলিও এদিন দলের প্রয়োজনে হাল ধরতে পারেননি। ভারতীয় অধিনায়ক ১৫ রানের ইনিংস খেলে টিম সাউদির বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান। এরপর একে একে ব্যর্থ হয়েছেন লোকেশ রাহুল (৪) ও কেদার যাদব (৯)।
দলের বিপদে শ্রেয়াস আইয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখান। তবে দলীয় ১২৯ রানে দলের ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে তার বিদায় নেন তিনি। এরপর ১৮ রানের ইনিংস খেলেন শার্দূল ঠাকুর। তবে আসল লড়াইটা শুরু হয় এরপরই। নবদীপ সাইনি আর জাদেজা মিলে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন।
সাইনি-জাদেজা জুটির ৭৬ রানের জুটিতেই জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ভারত। কিউই পেসার জেমিয়েসনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৯ বলে ৪৫ রানের দারুণ এক ইনিং উপহার দেন সাইনি। তার বিদায়ের পর কার্যত হারের পথ প্রশস্ত হয় ভারতের।
ভারতের ইনিংসের শেষদিকে জাদেজা হাত খুলে খেলতে শুরু করেন। এর মাঝে দেখা পান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটির। কিন্তু যুজবেন্দ্র চাহাল রান আউটের শিকার হওয়ার পর বাড়তি চাপ সরাতে জিমি নিশামের বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সেই সঙ্গে ৯ বল হাতে রেখেই হেরে যায় ভারত।
বল হাতে কিউইদের হয়ে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন হামিশ বেনেট, টিম সাউদি, কাইল জেমিয়েসন এবং কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। ১ উইকেট গেছে নিশামের ঝুলিতে।
এর আগে মার্টিন গাপটিল ও রস টেইলরের দুর্দান্ত দুটি ইনিংসে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। ওপেনিং জুটিতেই হেনরি নিকোলসকে নিয়ে ৯৩ যোগ করেছিলেন গাপটিল। নিকোলস ৫৯ বলে ৪১ রান করে বিদায় নেওয়ার পর ব্লান্ডেলের ব্যাট থেকে আসে ২২ রান।
দলকে ১৫৭ রানে রেখে গাপটিল যখন বিদায় নেন তখন বেশ ভালো অবস্থানেই ছিল নিউজিল্যান্ড। রান আউটের শিকার হয়ে ফেরার আগে গাপটিলের ব্যাট থেকে আসে ৭৯ বলে ৭৯ রান। ইনিংসটি ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো। গাপটিল বিদায় নেওয়ার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় কিউইরা।
একসময় ১৯৭ রানেই স্বাগতিকরা হারিয়ে ফেলে ৮ উইকেট। তবে এরপর নবম উইকেট জুটিতে জেমিয়েসনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যায় টেইলর। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা টেইলরের ব্যাট থেকে আসে ৭৪ বলে ৭৩ রান। ইনিংসটিতে চারের মার ছিল ৬টি, ছক্কা ২টি। আর জেমিয়েসন ২৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।
বল হাতে ৩টি উইকেট নিয়েছেন ভারতীয় স্পিনার চাহাল। ২ উইকেট গেছে শার্দূলের দখলে। আর ১ উইকেট নিয়েছেন জাদেজা।
ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের কাইল জেমিয়েসন।
এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল নিউজিল্যান্ড।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২০
এমএইচএম