জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তিন দিনের সফরে দুই ম্যাচ খেলে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। এবার কেবল সিরিজের শেষ ম্যাচটা বাকি।
ম্যাচের পূর্ববর্তী দিনে সে কথাই এসে জানালেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে। মাশরাফি বলেন, ‘সকালে মনে হয়েছে আমার এখানেই থামা উচিত। যে কথাগুলো হয়েছে, ২০২৩ সালের জন্য নতুন অধিনায়ক খুঁজছে বিসিবি। হুট করে কাউকে দিয়ে চলে না। তাকে আগে থেকে প্রস্তুত করতে হয়। আমি পেশাদারিত্ব থেকে অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ’
নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়ে পরিবারকেও জানিয়েছেন ম্যাশ। বলেছেন, তারাও শক্তভাবে আমার পাশে রয়েছে।
অধিনায়কত্বের স্বাচ্ছন্দবোধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি ঘুম থেকে উঠে খুব সুন্দর নাস্তা রেডি পান, দুপুরের ও রাতের খাবার রেডি রাখা হলো, স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করলেন। তাতে আপনার জীবনের মূল্য কি থাকলো, কিছুই না। তাই সব সময় চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। আরেকটা বিষয় হলো পরিস্থিতি আপনার বিপক্ষে, সেখান থেকে উঠে আসা। সেটাও একটা উদাহরণ। ’
মাশরাফি আরও বলেন, ‘অভিমান থেকে নয়। আমার এটা শেষ। এরমধ্যে যা কিছু হয়েছে, এগ্রি-ডিজএগ্রি। আমার ভুলও হতে পারে। তবে কম্বিনেশন করে এগিয়ে যেতে হবে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেখ ম্যাচ দিয়ে নেতৃত্বের ইতি টানবেন মাশরাফি। অবশ্য দলনেতা হিসেবে আর না থাকলেও এখনই ক্রিকেট থেকে অবসরে যাচ্ছেন না তিনি।
সে ব্যাপারে সংবাদ সম্মলেনে মাশরাফি বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচটিই হবে আমার শেষ ম্যাচ। তবে জাতীয় দলে আমি খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করবো। আজ সকালে আমি সিদ্ধান্তটি নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত আমার পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে। ’
হুট করে কেন এভাবে সরে যাওয়া? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, ‘এখন থেকে ২০২৩ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছে বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড)। নতুন অধিনায়ককে এখন থেকে গড়ে তুলতে চাচ্ছে তারা। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি একমত। তাই অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো। ’
যে দলের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নেতৃত্বে ফিরেছিলেন মাশরাফি এবার একই দলের বিপক্ষেই অধিনায়কত্বের ইতি টানবেন ৩৬ বছর বয়সী ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের একমাত্র নকআউট পর্বে খেলার ঘটনা। ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তার নেতৃত্বেই সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ।
মাশরাফির অধীনে এখন পর্যন্ত ৮৭টি ওয়ানডে খেলে ৪৯টিতে জয় আর ৩৬টিতে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। এমন রেকর্ড বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে আর কোনো অধিনায়কের নেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে দারুণ একটি মাইলফলক অপেক্ষা করছে মাশরাফির জন্য। এ ম্যাচ জিতলেই অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম ওয়ানডে জয়ের কীর্তি গড়বেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘন্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
এনইউ/ইউবি