ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

লজ্জার রেকর্ডের পর বড় হার ভারতের

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
লজ্জার রেকর্ডের পর বড় হার ভারতের

৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর এবার ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারল ভারত। অন্যদিকে এই নিয়ে গোলাপি বলে শতভাগ জয়ের (৮ টেস্ট খেলে সবক'টিতেই জয়) রেকর্ড ধরে রাখলো অস্ট্রেলিয়া।

শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিরাট কোহলিদের ছুড়ে দেওয়া ৯০ রানের লক্ষ্য ২ উইকেট হারিয়েই পেরিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। উদ্বোধনী জুটিতে ম্যাথু ওয়েড ও জো বার্নস মিলেই স্বাগতিকদের ৭০ রান এনে দেন। ওয়েড ৩৩ রান করে রানআউট হয়ে ফেরার পর ১২ রান যোগ হতেই ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার হন মার্নাস লাবুশানে।  

লাবুশানের বিদায়ের সময় জয়ের জন্য মাত্র ৮ রান দরকার ছিল অজিদের। যা অনায়াসেই তুলে নেন বার্নস ও স্টিভ স্মিথ। এরমধ্যে আবার দারুণ এক ফিফটি তুলে নেন বার্নস। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা এই অজি ওপেনার তার ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭ চার ও ১ ছক্কায়। ওই এক ছক্কা হাঁকিয়ে আবার দলের জয় নিশ্চিতের পাশাপাশি ফিফটিও ছুঁয়েছেন তিনি। স্মিথ অপরাজিত থাকেন ১ রান নিয়ে।

অ্যাডিলেডে দিবারাত্রির টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই চালকের আসন থেকে হারের মুখে দাঁড়িয়ে যায় ভারত। দুই অজি পেসার প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউডের সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে মাত্র ৩৬ রানেই গুটিয়ে যান কোহলিরা। যা আবার দলটির টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ৪২ রানের। ১৯৭৪ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের কাছে পাওয়া সেই লজ্জার রেকর্ড এখন কোহলির দলের দখলে।  

অথচ প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানের লিড ছিল ভারতের। কোনোমতে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রান করতে পারলেও স্বাগতিকদের চাপে ফেলা যেত। কিন্তু গোপালি বলের সুইং সামলাতে ব্যর্থ সফরকারী দলের কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অংক ছুঁতে পারলেন না। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ইনিংসগুলো পরপর সাজালে দাঁড়ায়- ৪, ৯, ২, ০, ৪, ০, ৮, ৪, ০, ৪, ১। তবে শেষ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শামি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরেছেন। ফলে ভারত আসলে উইকেট হারিয়েছে ৯টি। শেষ পর্যন্ত সিরিজের প্রথম দিবারাত্রির টেস্টে অজিদের সামনে ভারত লক্ষ্য দিতে পারে মাত্র ৯০ রানের।

টেস্ট ইতিহাসে ভারতের এই ৩৬ রানের ইনিংস সবমিলিয়ে যৌথভাবে পঞ্চম সর্বনিম্ন। তবে সমান ৩৬ রান আছে আরও দুই দলের। মাঝে ৩০ রানে দুবার অলআউট হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই হিসেবে ভারতের বর্তমান অবস্থান সপ্তম। ১৯৫৫ সালের ২৫ মার্চ ইংলিশদের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাত্র ২৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া সর্বনিম্ন ইনিংসের রেকর্ডের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে।  

শনিবার কামিন্স-হ্যাজেলউডের সামনে পাত্তাই পাননি কোহলিরা। আগের দিনের শেষে দলীয় ৯ রানের মাথায় পৃথ্বী শ (৪) বিদায় নিয়েছিলেন। বাকি ব্যাটসম্যানরা তৃতীয় দিনের শুরুতেই সেই পথ ধরলেন। শুরুটা হলো জসপ্রীত বুমরাহকে দিয়ে। দলকে ১৫ রানে রেখে কামিন্সের বলে বোলারের হাতেই ক্যাচ তুলে দেন ভারতীয় নাইট-ওয়াচম্যান।  

বুমরাহ তবু ব্যাটসম্যান নন, ফলে তার বিদায় অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এরপর যেন তাসের ঘরের মতো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল ভারতীয় ইনিংস। ওই ১৫ রানেই একে একে বিদায় নিলেন চেতেশ্বর পূজারা, ময়াঙ্ক আগারওয়াল এবং আজিঙ্কা রাহানে। বিরাট কোহলি একটা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানাতে চাইলেও কামিন্সের বলেই তার লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে। ভারতীয় অধিনায়ক মাত্র ৪ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।

কোহলি বিদায় নেওয়ার পর বাকিরাও সেই পথে পা বাড়াতে দেরি করেননি। একে একে সাজঘরে ফিরতে শুরু করেন হনুমা বিহারি, ঋদ্ধিমান সাহা, অশ্বিনরাও। অজি পেসার হ্যাজেলউড একাই তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ৫ ওভারে ৩ মেডেনসহ রান খরচ করেছেন মাত্র ৮! কামিন্স অবশ্য ১০.২ ওভারে ২১ রান খরচ করেছেন, কিন্তু উইকেট তুলে নিয়েছেন ৪টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

ভারত ১ম ইনিংস: ২৪৪ (কোহলি ৭৪; স্টার্ক ৫৩/৪, কামিন্স ৪৮/৩)
ভারত ২য় ইনিংস: ৩৬ (আগারওয়াল ৯; কামিন্স ২১/৪, হ্যাজেলউড ৮/৫)

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৯১ (পেইন ৭৩; অশ্বিন ৫৫/৪, উমেশ ৪০/৩)
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৯৩/২ (বার্নস ৫১; অশ্বিন ১৬/১)

ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যাচ সেরা: টিম পেইন (অস্ট্রেলিয়া)

সিরিজ: ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।