চট্টগ্রাম: নিয়ম অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। কিন্তু সেই জরুরি বিভাগই রাত ১২টার আগেই হয়ে যায় বন্ধ।
করোনা মহামারির সময় হাসপাতালটি সুনাম কুড়ালেও এখন তা ধরে রাখতেই যত অনীহা। ভিতর থেকে গেটে ঝুলানো হয় তালা, চিকিৎসকও থাকেন না জরুরি বিভাগে। ফটকে একজন প্রহরী থাকলেও সময় কাটান ঘুমিয়ে। শীত মওসুম হওয়ায় ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। গভীর রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীরা এখানে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের ফটকে ভিতর থেকে ঝুলছে তালা। সেবা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দরজায় কড়া নাড়ছেন। কিন্তু বেশ কয়েকবার ডাকাডাকি করেও ভিতর থেকে মিলেনি সাড়া। হতাশ হয়ে রোগীকে নিয়ে ফেরার পথে ভিতর থেকে এক প্রহরীর আগমন। কিছু জিজ্ঞেস করতেই শত বিরক্তি তার চোখে মুখে। বাক্যবাণ সহ্য করে রোগী নিয়ে স্বজনকে ছাড়তে হয় হাসপাতাল।
দীপংকর নামের এই রোগীর স্বজন বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাসার কাছে বলেই জরুরি অবস্থায় রোগীকে এখানে এনেছি। কিন্তু এসে দেখি জরুরি বিভাগে তালা লাগানো। একটি সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ যে এভাবে বন্ধ থাকতে পারে, আমার জানা ছিল না। এখন বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছি।
সব হাসপাতালে জরুরি বিভাগে জরুরি সেবা থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে জরুরি বিভাগ না থাকায় সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয় চট্টগ্রামের অন্তত ডজনখানেক হাসপাতাল। স্বাস্থ্য বিভাগের এ অভিযান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত হলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে কোনও তদারকি নেই।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বাংলানিউজকে বলেন, জরুরি বিভাগ বন্ধ রাখা যায় না। তবে যেহেতু শীতকাল, রোগীর সংখ্যা কম থাকায় হয়তো গেট লাগানো থাকতে পারে। গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তারপরও যেহেতু অভিযোগ এসেছে, অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, যেসব হাসপাতালে ইনডোর সুবিধা আছে সেসব হাসপাতালে জরুরি বিভাগ থাকা আবশ্যক এবং ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
এমআর/টিসি