ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

যে কারণে আলোচিত চবির ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভা

মোহাম্মদ আজহার, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
যে কারণে আলোচিত চবির ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভা ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: দুই দফায় সিন্ডিকেট সভার তারিখ পেছানোর পর এবার কয়েক দফায় পরিবর্তন করা হয়েছে সিন্ডিকেটের আলোচ্যসূচি।  

নানান নাটকীয়তার পর শুক্রবার (১৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভা।

 

এর আগে ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় চবির সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভা। সঙ্গত কারণেই ওই সিন্ডিকেট সভা বেশ আলোচিত হয়।

দীর্ঘদিন পর চলতি বছরের ৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের ৪টি শিক্ষক প্রতিনিধি পদে নির্বাচন হয়। অথচ নির্বাচনের ঠিক দুইদিন আগেই তড়িঘড়ি করে শেষ করা হয় ৫৪৩তম সিন্ডিকেট সভা। সেসময় চবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে দুই দফায় ওই সিন্ডিকেট সভা পিছিয়ে নির্বাচনের পরদিন (৭ মার্চ) করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করা হয়।

জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের দাবি, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আসার আগেই নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এজেন্ডাগুলো কোনও বাধা ছাড়াই অনুমোদন করে নেওয়া ছিলো ওই সিন্ডিকেট সভার মূল লক্ষ্য। জানা গেছে, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষকদের পদোন্নতি, বিভিন্ন প্রকল্পের বাজেট, একাডেমিক কাউন্সিলে জমা হওয়া এমফিল, পিএইচডিসহ অনেকগুলো বিষয় অনুমোদন করা হয় ৫৪৩তম সিন্ডিকেট সভায়।

এদিকে সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার আগের ২ মাস ৪ দিনে ৪টি সিন্ডিকেট সভা করলেও এরপর ৪ মাসে আর কোনো সিন্ডিকেট সভা হয়নি।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় চবির ৫৪০তম সিন্ডিকেট সভা। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ৫৪১তম সিন্ডিকেট সভা। চলতি বছরে ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় সিন্ডিকেটের ৫৪২তম সভা। এরপর গত ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় চবির সর্বশেষ ৫৪৩তম সিন্ডিকেট সভা। সেই হিসেবে সিন্ডিকেট নির্বাচনের আগে মাত্র ৬৪ দিনের মধ্যে ৪টি সিন্ডিকেট সভা হয়েছে।

এদিকে ৪ মাস পর গত ৯ জুলাই ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। পরে তা একদিন পিছিয়ে ১০ জুলাই করা হয়। সর্বশেষ পরিবর্তন করা তারিখ অনুযায়ী আজ শুক্রবার (১৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের ৫৪৪তম সভা।  

যদিও এ সিন্ডিকেট সভা নিয়ে রয়েছে নানান জল্পনা-কল্পনা। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মতে, এটিই হতে পারে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের মেয়াদকালের শেষ সিন্ডিকেট সভা। তাই বর্তমান প্রশাসন এ সিন্ডিকেটে পাস করিয়ে নিতে পারেন নিজেদের বিভিন্ন এজেন্ডা।

সিন্ডিকেটের আলোচ্যসূচি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানান টালবাহানা করছে বলেও মন্তব্য করেছেন সিন্ডিকেট সদস্যরা।

সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, নিয়মানুযায়ী সিন্ডিকেট সভার ৭দিন আগে সদস্যদের সভার আলোচ্যসূচি জানাতে হয়। অথচ চবির ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভার আলোচ্যসূচি নিয়ে নানান নাটকীয়তা করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গত চার মাসে কোনো সিন্ডিকেট সভা করেনি। সিন্ডিকেটে কি কি বিষয় এজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে- বিস্তারিত সভা শেষে বলতে পারবো।

কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, উপাচার্যের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে। তাই অসম্পূর্ণ এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে নানান পাঁয়তারা করছে প্রশাসন, যা দীর্ঘদিন সিন্ডিকেট সভা বন্ধ রাখা, একাধিকবার সিন্ডিকেটের সময় পেছানো এবং আলোচ্যসূচি নিয়ে নাটকীয়তা থেকেই স্পষ্ট। কারণ সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের ৪ মাস ১০ দিন পর সিন্ডিকেট সভা করা হচ্ছে। তাও এরমধ্যে নানান সমালোচনার জন্ম দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভা ঘিরে কর্তৃপক্ষের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।