ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গবেষণা ও ব্যবহারিক শিক্ষায় গুরুত্ব সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে 

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪
গবেষণা ও ব্যবহারিক শিক্ষায় গুরুত্ব সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে  ...

চট্টগ্রাম: নগরের মেহেদীবাগে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ২০০৬ সালে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। যাত্রার পর থেকে গবেষণা ও ব্যবহারিক শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

যার ফলে এ বিভাগ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করে অনেকেই দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শুরু করার সুযোগ পেয়েছেন। অনেকে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার লক্ষ্যে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ফার্মেসি বিভাগ ২০০৬ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে মাত্র ৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ২০২০ সাল থেকে নগরের আরেফীন নগরে স্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু হয়। এখন এ বিভাগে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২০০ জন। যাত্রার দেড় যুগে ২৯টি ব্যাচে মোট ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী এ বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। ফার্মেসি বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও ফার্মেসি কাউন্সিল অনুমোদিত। গেল বছরের ১৩ ডিসেম্বর ফার্মেসি কাউন্সিলের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ পরিদর্শন করেন। পরে ১৯ ডিসেম্বর ফার্মেন্সি বিভাগের সামগ্রিক কার্যক্রমে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করে চিঠি দেন।  

ফার্মেসি বিভাগের যত সুযোগ-সুবিধা

ফার্মেসি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সুযোগ-সুবিধা। মেধাক্রম অনুযায়ী মেধাবৃত্তি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ মোট ৯টি ল্যাব রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব লাইব্রেরি ও অ্যানিমেল হাউস। ক্লাসরুম শীতাতপনিয়ন্ত্রক ও আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা সম্বলিত। টিউশন ফি রয়েছে শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে। ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি ও হাসপাতালভিত্তিক প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে। আধুনিক ও সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির সাহায্যে গবেষণা করা হয় ল্যাবরেটরিতে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ও উপ-উপাচার্য এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এখানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও ফার্মেসি কাউন্সিলের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহারিক ও তত্ত্বীয় ক্লাস পরিচালনা করা হয়। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞানসমৃদ্ধ করার জন্য এ বিভাগে আধুনিক ও উন্নত সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ল্যাব রয়েছে। প্রতি সেমিস্টারে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিজিট করা হয়।

তিনি আরও বলেন, শুধু সুন্দর আর নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করলেই হবে না, সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার ছাত্র-ছাত্রীদের নিশ্চিত করতে হবে।

ফার্মেসি বিভাগীয় প্রধান আইরিন সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে স্নাতক পর্যায়ে ফাইটোকেমিক্যাল, ফার্মাকোলজিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রযুক্তির ওপর গবেষণার সুযোগ আছে। এ ছাড়া বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণামূলক সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিভাগে বর্তমানে ১২জন পূর্ণকালীন শিক্ষক আছেন। তাঁদের মধ্যে দুইজন বিদেশে গবেষণায় যুক্ত আছেন। এ ছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণী শিক্ষকেরা আমাদের পাঠ্যক্রম তৈরিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।

সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ছাত্র বাহারুল ইসলাম ২০১৪ সালে স্নাতক শেষ করে বৃত্তিসহ আমেরিকার স্বনামধন্য মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করেন। বিশ্বের বিভিন্ন নামকরা জার্নালে তাঁর একাধিক প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষকেরা বিশ্বমানের পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উন্নত ক্যারিয়ার গড়তে উৎসাহ দেন। ফার্মেসি বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। তা ছাড়া এ বিভাগের ব্যবহারিক সুযোগ-সুবিধাও যুগোপযোগী’।

সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে চার বছরের স্নাতক করতে সব মিলিয়ে খরচ হবে ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। তবে বিভিন্ন মাত্রায় টিউশন ফি’র ওপর ছাড়ের সুযোগ আছে।  

ফার্মেসি একটি যুগোপযোগী প্রোগ্রাম। এর মূল কাজ হচ্ছে- ওষুধ আবিষ্কার, উৎপাদন ও গুণগত মান উন্নয়ন। ফার্মেসি পড়ে ফার্মাকোলজি, বায়োটেকনোলজি, বায়োইনফরমেটিকস, নিউরোসায়েন্স, জেনেটিকস ইনফরমেশনসহ অনেক বিষয়েই উচ্চশিক্ষার গ্রহণ করা যায়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই ফার্মেসি প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। আমেরিকাসহ কানাডা, মধ্যপ্রাচ্য, জাপান ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। ফার্মাসিউট্রিকস, ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি, নিউরোলজি, বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স, ফিজিওলজি, প্যাথোলজি ও টক্সিকোলজি প্রোগ্রামগুলোতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে। এ ছাড়া পাবলিক হেলথ, বায়োকেমিস্ট্রি, মলিকুলার বায়োলজি, ইমিউনোলজি প্রোগ্রামে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে।  

মানসম্মত ওষুধ সরবরাহ থেকে শুরু করে ওষুধ নিয়ে গবেষণায় একজন ফার্মাসিস্ট বহুমুখি কাজের দায়িত্বে থাকেন। তাই বর্তমান সময়ে কদর বাড়ছে ফার্মেসি গ্র্যাজুয়েটদের।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪ 
বিই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।