চট্টগ্রাম: নগরের চান্দগাঁওয়ে টার্ফ (কৃত্রিম ঘাস) মাঠ দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে জুবায়ের উদ্দিন বাবু (২৬) নামে এক যুবক ছুরিকাঘাতে নিহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আমিনসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নগরের চান্দগাঁও থানায় নিহত জুবায়ের উদ্দিন বাবুর ভগ্নিপতি আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দীন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, নুরুল আমিন, জাশেদুর রহমান নওশাদ, মো. আলফাজ, আবির রহমান রুবেল, ফয়সাল মোরশেদ, মো. ফাহিম, মো. জাহেদ, মো. নয়ন, মো. হাছান প্রকাশ ঢাকাইয়া হাছান, মো.পারভেজ, জয়নাল আবেদিন সাকিব, মো. নাজিম, মো. হাকিম, মো. আমজাদ, মো. সালাউদ্দিন, মুনতাছির মাহিন, কুতুব উদ্দিন জাহেদ, আরিফ মঈনুদ্দিন, মো. সোহান, মো. ফাহিম, মো. খোকন, মো. সাকিব, রনি, সাইমন, আবছার, রিয়াদ, খলিল, জুয়েল, সোহেল, রিয়াদ, খোকন, মো. আবছার, আলী খাঁন লিটন, নেজাম উদ্দিন, মহিউদ্দিন বাবু, ইরফান, মিরাজ, তারেক, মো. মুরসালিন ও ফারুক।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নগরের চান্দগাঁও থানার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পাশেই চান্দগাঁও স্পোর্টস জোন নামে একটি টার্ফ উদ্বোধনে যায় জুবায়ের উদ্দিন বাবু। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে খেলার আগমুহুর্তে আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দেশী অস্ত্রশস্ত্রসহ টার্ফের মালিকপক্ষ, আয়োজক কমিটি ও দর্শকদের ওপর হামলা করে। এ সময় টার্ফের ভেতরে থাকা বাবুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বিষয়ে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফতাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, জুবায়ের উদ্দিন বাবু খুনের ঘটনায় ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে নাজিম উদ্দিন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ (শনিবার) আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে স্পোর্টস জোন দখল নিয়ে নগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. আমিনের অনুসারীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। মোশাররফ হোসাইন টার্ফটি ইজারা নিয়েছেন বলে দাবি তাঁর পক্ষের লোকজনের। তবে নুরুল আমিন গ্রুপের লোকজন টার্ফটি দখল নিতে চেয়েছেন। এর সূত্র ধরেই সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এতে বাবু নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। নিহত বাবু সদ্য বিলুপ্ত নগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসাইনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে নগর যুবদল নেতাদের দাবি, জুবায়ের যুবলীগের কর্মী। তিনি যুবদলের কেউ নন। ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ বাংলানিউজকে বলেন, নিহত বাবু আমাদের যুবদলের কেউ নন। তিনি যুবলীগের কর্মী। তাঁর ফেসবুকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে ছবি ও সাংগঠনিক কার্যক্রমের ছবি রয়েছে। মামলার বাদী নাজিম উদ্দীনও আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি আরও বলেন, যুবলীগের কর্মীকে দলে এনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য দল থেকে মোশাররফসহ দুইজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের কাছে আমরা বার্তা দিয়ে আসছি দলের নাম ভাঙাতে, যাতে নতুন করে কোনো বিশৃঙ্খলাকারী প্রবেশের সুযোগ না পায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
এমআই/টিসি