ঢাকা, শুক্রবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘মানুষ যাতে মশার কামড় খেয়ে হাসপাতালে আসতে না হয়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
‘মানুষ যাতে মশার কামড় খেয়ে হাসপাতালে আসতে না হয়’ চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম: মশা নিয়ন্ত্রণে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগকে কার্যকর ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।  

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে পরিচ্ছন্ন বিভাগের মতবিনিময় সভায় তিনি নির্দেশনা দেন।

প্রয়োজনে মশা নিয়ন্ত্রণে ওষুধ ক্রয়, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও নতুন কৌশল খুঁজে বের করারও নির্দেশ দেন তিনি।

মেয়র বলেন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অভিযান চালানোর ফলে নগরের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে কিছুটা হলেও গতি এসেছে।

তবে, সামনে বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও মশা নিয়ন্ত্রণে ওয়ার্ডভিত্তিক মনিটরিং চলবে। আমরা ইতোমধ্যে ১০০ পিস ফগার মেশিন এবং ১২০ পিস স্প্রে মেশিন কিনেছি। এ ছাড়া, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বেশ কিছু ব্যাংক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে ডেঙ্গু ও মশাবাহিত স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় অত্যাধুনিক ফগার মেশিন উপহার দিয়েছে। আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা চলছে, তারাও জনগণের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী। জলাবদ্ধতা নিরসনে নালা-খাল পরিষ্কারের জন্য ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ব্যাকহোলোডার গাড়ি সংগ্রহ করেছি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪০ হাজার বিন বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জনগণ যাতে উপকৃত হয়। জনগণ যাতে মশার কামড় খেয়ে হসপিটালে আসতে না হয় কিংবা মৃত্যুবরণ না করে কিংবা তারা কোনো ডিস্টার্ব ফিল না করে এজন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

মশা নিয়ন্ত্রণের ওষুধ সম্পর্কে মেয়র বলেন, মশার ওষুধের যাতে কোনোভাবেই ঘাটতি না পড়ে। বর্তমানে দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশার জীবনচক্র বদলে যাচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনে আপনারা নতুন ওষুধের সন্ধান করুন। আরো কোনো কোম্পানি যদি ভালো ওষুধের খোঁজ দিতে পারে সেগুলো আমরা সংগ্রহ করবো। এ ব্যাপারে আমরা কোনো আপস করতে চাই না। মশা নিয়ন্ত্রণে কিছু বিকল্পের কথা ভাবছি আমরা। মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে এমন মাছ, কীটপতঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে।  

জনসচেতনতার ওপর জোর দিয়ে মেয়র বলেন, আপনারা জনসচেতনতা বাড়াবেন। আমিও চেষ্টা করছি। বিভিন্ন জায়গায় নালা, ঝোপ-ঝাড় এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেঙ্গুর ব্যাপারে আমরা লিফলেট বিতরণ করছি এটা আরো বাড়াতে হবে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জিরোতে নিয়ে আসতে হবে। জনসচেতনতা আমরা যদি বাড়াতে না পারি তাহলে আল্টিমেটলি গিয়ে জনগণের আমরা কোনো উপকারে আসতে পারবো না। এই ডেঙ্গু মশার জন্য আমরা বারবার বলছি যেকোনো জায়গায় ডাবের খোসা, নির্মাণসামগ্রী যাতে উন্মুক্ত না রাখা হয়। কারণ সেখানে যদি পানি জমা থাকে তাহলে এডিস মশার লার্ভা জন্ম নেবে। বাসায় দুই তিন দিনের জন্য বালতিতে পানি জমিয়ে রাখবেন না এবং টবের মধ্যে পানি জমিয়ে রাখবেন না এবং খোলা জায়গায় টব রেখে সেখানে পানি জমা করবেন না কারণ পানি জমে গেলেই এডিস মশার লার্ভা জন্মাবে।  

যে সব পরিচ্ছন্ন কর্মী মশার স্প্রে করার ক্ষেত্রে গাফিলতি করছে তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি যারা সুপারভাইজার আছেন স্পষ্টভাবে বলতে চাই কেউ ফাঁকিবাজি করলে এটার দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। যদি আপনারা লুকাতে চান আমরা আল্টিমেটলি খবর পেয়ে যাব। প্রতিটি এলাকায় আমাদের লোকজন আছে। কাজেই আপনাদের আমি স্পষ্ট বলতে চাই আপনারা কেউ গাফিলতি করলে, কেউ ফাঁকিবাজি করলে, কেউ কাজ না করলে লুকানোর চেষ্টা করবেন না। বরং এটা আমাদের ইনফর্ম করেন। আমরা দরকার হলে নতুন লোক দিয়ে কাজ করাবো। আমি চাই কাজ হোক। কাজ হতে হবে। না হয় জনগণ দুর্ভোগে পড়বে। জনগণ দুর্ভোগে পড়লে আল্টিমেটলি এটার দায় দায়িত্ব তো স্বাভাবিকভাবে আমাদের নিতেই হবে।  

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।