ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২, ২৭ জুন ২০২৫, ০১ মহররম ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অভির নামে সড়ক নামকরণ করা হবে: মেয়র শাহাদাত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:২২, জুন ২৬, ২০২৫
অভির নামে সড়ক নামকরণ করা হবে: মেয়র শাহাদাত ...

চট্টগ্রাম: অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চেতনা তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আগ্রাবাদে মাদক ব্যবসায়ীদের ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদল নেতা মীর সাদিক অভির নামে একটি সড়কের নাম রাখা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অভির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মীর অভি স্মৃতি সংসদ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য গাজী মো. সিরাজ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সামিয়াত আমিন জিসানের পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ত্যাগীরা কখনো মরে না।

তারা মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকে। মীর অভি শুধু একজন রাজনৈতিক কর্মী নয়, সে ছিল একজন প্রতিবাদী, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠস্বর। তার মতো তরুণদের আত্মত্যাগ স্মরণীয় করে রাখতে আমরা চট্টগ্রামের একটি সড়ক তার নামে নামকরণ করবো।

তিনি বলেন, অভি যেভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে, মাথা নত করেনি, তা তরুণদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে। যারা দেশের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকারের পক্ষে কথা বলে রাজপথে নেমেছে, তারা নিঃসন্দেহে ইতিহাসে বেঁচে থাকবে।

অভি শুধু ঘরের মধ্যে প্রতিবাদ করত না, রাজপথে স্লোগানে, বক্তৃতায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত। আমি নিজে তার সেই প্রতিবাদী রূপ দেখেছি। এমনকি আহত অবস্থায়ও সে আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসেনি।

মেয়র অভির আত্মার মাগফিরাত কামনা করে  বলেন, অভির পরিবার বহু ত্যাগ স্বীকার করেছে। যখন অনেকেই ভয় পেয়ে ঘরে ছিল, তখন অভির পরিবার রাজপথে ছিল। আজকের দিনে আমাদেরও সেই প্রতিবাদী চেতনায় জেগে উঠতে হবে।

তরুণদের অন্যায়ের প্রতিবাদে সরব হওয়ার আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, আওয়ামী লীগের অবৈধ শাসনামলে যারা সাময়িকভাবে আনন্দ পেয়েছে, তারা ইতিহাসে পরাজিত হয়েছে। কিন্তু অভির মতো যারা বছরের পর বছর শোষণ নির্যাতন সহ্য করে সংগ্রাম করেছে, দিনশেষে তারাই জয়ী হয়েছে। আমাদের সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ইতিহাসের অমোঘ বিচারে শেখ হাসিনাকে বিদায় নিতে হয়েছে, যেমন নিয়েছে এরশাদ কিংবা স্বৈরাচারী অন্য নেতারা।

তিনি বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র ছিল অভি। মাদকবিরোধী নানামুখী ভূমিকার কারণে সে সর্বমহলে পরিচিত ছিল। অভি একজন সাহসী যোদ্ধা ছিল। সে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছে। অভির হত্যাকাণ্ডে আমাদের হৃদয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। অভির মৃত্যুর পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও হত্যাকারীদের এখনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। খুনি সন্ত্রাসীরা এখনও এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছে, অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এমএ আজিজ, হারুন জামান, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলাম, মীর সাদিক অভির মা মোছাম্মৎ শিরিন আকতার, অভির সহধর্মিণী ফারিয়া সুলতানা অহনা ও একমাত্র কন্যা মীর নুর তাজ আলিজা।  

বক্তব্য দেন কোতোয়ালী থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, মহানগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী মর্তুজা খান, মহানগর তাঁতীদলের সাবেক আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলাম কুতুবী, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিএম সালাহউদ্দিন কাদের আসাদ, ফখরুল ইসলাম শাহীন প্রমুখ।  

এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।